পোস্টগুলি

জুন, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

দুনিয়ার ভোগ–বিলাস নিয়ে সুরা তাকাসুরের সতর্কতা

ছবি
  সুরা তাকাসুর পবিত্র কোরআনের ১০২ তম সুরা। সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এর রুকু ১, ৮ আয়াত। তাকাসুর শব্দের অর্থ প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা। প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতায় মোহাচ্ছন্ন মানুষেরা জাহান্নাম প্রত্যক্ষ করবে। সেদিন তাদের আরাম–আয়েশ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে। যারা কেবল দুনিয়ার ভোগ–বিলাসকেই জীবনের লক্ষ্য করে তুলেছে, এই সুরায় তাদের পরিণাম নিয়ে কথা বলা হয়েছে। বিলাস–ব্যসনে নিমগ্ন জীবনে মৃত্যু এসে উপস্থিত হবে হঠাৎ। সব জৌলুস নিভে যাবে। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। কেয়ামতের দিন এসব ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হবে। সুরার প্রথম আয়াতে বলা হয়েছে, ‘প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদের মোহাচ্ছন্ন করে রাখে।’ দুনিয়ায় মোহ মানুষকে ফিরিয়ে রেখেছে। একজন আরেকজনের কাছ থেকে বেশি পাওয়ার প্রতিযোগিতায় মেতে থাকে। একটি সচ্ছল ও শান্তিপূর্ণ জীবন কামনা করা খারাপ নয়। কিন্তু পাওয়ার লালসা বড় হয়ে উঠলে এর পেছনে ছোটাই হয়ে ওঠে জীবনের মূল উদ্দেশ্য। এই প্রতিযোগিতায় নিজের অহংকার ফুলে–ফেঁপে ওঠে এবং অন্যকে পিছিয়ে দেওয়ার মন্দ ইচ্ছা মন দখল করে নেয়। দ্বিতীয় আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যতক্ষণ না তোমরা কবরের সম্মুখীন হও।’ কবরে যেতে হবেই। আর ...

প্রথম প্রকাশ্যে কোরআন তিলাওয়াত

ছবি
  প্রথম প্রকাশ্যে কোরআন তিলাওয়াত মহানবী (সা.) হিজরতের আগে মক্কায় মুসলমানদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের অসম্ভব কঠিন এক পরিস্থিতি। তাকে উপেক্ষা করে মক্কার বায়তুল্লাহ প্রাঙ্গণে মহানবী (সা.)–এর সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) প্রকাশ্যে কোরআন তিলাওয়াত করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি কাবা শরিফে মাকামে ইবরাহিমের কাছে দাঁড়িয়ে উচচ স্বরে সুরা আর রহমানের কিছু অংশ তিলাওয়াত করেন। কুরাইশ নেতারা তা শুনে হতবাক হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তারা তাঁর দিকে ছুটে গিয়ে নির্দয়ভাবে তাঁর মুখে আঘাত করতে থাকে। নির্যাতনের পরও তিনি বলেছিলেন, আল্লাহর শত্রুরা আমার কাছে খুবই তুচ্ছ। আমি আবারও গিয়ে তাদের সামনে কোরআন তিলাওয়াত করব। তিনিই প্রথম মুসলমান যিনি প্রকাশ্যে কোরআন তিলাওয়াত করেছিলেন।হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)–র আবেগময় কোরআন তিলাওয়াতের প্রশংসা করে রাসুল (সা.) বলেছেন, কোরআর যেভাবে নাজিল হয়েছে, কেউ যদি সে অনুসারে সুন্দরভাবে তা তিলাওয়াত করে আনন্দ পেতে চায়, তাহলে সে যেন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) এর মতো করে কোরআন তিলাওয়াত করে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)–র জন্ম মক্কায়। খুব অল্প বয়সে ইসলাম গ্রহণ...

আল্লাহ হজের যে প্রতিদান দেবেন

ছবি
  জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৭ জুন হজ হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৩ হাজার হজযাত্রী এবার হজ পালন করবেন। হজ সাদামাটা পাঁচটি দিনের বিষয় নয়। এই পাঁচ দিন যদি আপনি হজের ফিকাহ অনুযায়ী আপনাকে সবকিছু সঠিকভাবে পালন করতে হবে, হজের করণীয় ছাড়া অন্য কাজে লিপ্ত হওয়া যাবে না, কী করছেন এবং কেন করছেন, তা উপলব্ধি করে সব আচারবিধি পালন করতে হবে। এই হজের প্রতিদান আল্লাহ কী দেবেন? আবু হুরায়রা (রা.)–র হজ সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এক ওমরাহ (থেকে) অন্য ওমরাহর পর্যন্ত মধ্যবর্তী সব গুনাহকে মুছে দেয়। আর মাবরুর হজের একমাত্র প্রতিদান হলো জান্নাত। (বুখারি, হাদিস: ১,৬৮৩) বুখারির বর্ণনায় আছে যে হজরত আয়েশা (রা.)–র বর্ণনায় আছে যে তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা দেখছি জিহাদ সর্বোত্তম আমল। আমরাও জিহাদে যেতে চাই। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, (তোমাদের জন্য) সর্বোত্তম জিহাদ হলো হজে মাবরুর। (বুখারি, হাদিস: ১৫২০) মহানবী (সা.)–এর সাহাবী আমর ইবনুল আস (রা.) একবার শয্যাশায়ী। তাঁর ছেলে বলল, আপনি একজন মুমিন। রাসুলুল্লাহ (সা.) আপনাকে সুসংবাদ দিয়েছেন, সেখানে আপনি মৃত্যুর আগে এভাবে কান্নাকাটি ক...

নবীজি (সা.)–এর সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু

ছবি
  একদিন রাসুল (সা.) জোহরের নামাজের পর সাহাবায়ে কেরামদের জিজ্ঞেস করলেন, আজ তোমাদের মধ্যে কে রোজা রেখেছে? হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) উত্তর দিলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আজ আমি রোজা রেখেছি। রাসুল (সা.) আবার জিজ্ঞেস করলেন, আজ তোমাদের মধ্যে কে গরিব-মিসকিনকে সদাকা করেছে? আবু বকর (রা.) উত্তর দিলেন, ইয়া নবী, আমি আজ গরিব-মিসকিনকে সদাকা করেছি। নবীজি (সা.) আবার প্রশ্ন করলেন, আজ তোমাদের মধ্যে কে অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে গিয়েছিলে? আবু বকর (রা.) দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, আজ আমি একজন অসুস্থ ভাইকে দেখতে গিয়েছিলাম। রাসুল (সা.) আবার প্রশ্ন করলেন, আজ তোমাদের মধ্যে কে জানাজায় অংশগ্রহণ করেছে? আবু বকর (রা.) জবাব দিলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমি জানাজায় অংশগ্রহণ করেছি। রাসুল (সা.) পঞ্চমবার প্রশ্ন করলেন, আজ তোমাদের মধ্যে কে মুসলিম ভাইয়ের মধ্যে সমঝোতা করেছে? আবু বকর (রা.) উত্তর দিলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি সমঝোতা করে দিয়েছি। অতঃপর রাসুল (সা.) বললেন, যে লোক এই ভালো আমলগুলো করবে, তার প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়। (মুসলিম, হাদিস: ১০২৮) এক রাতে রাসুল (সা.) আবু বকর (রা.)–এর দরজায় কড়া নাড়লেন। প্রথম...

অনাথ ও দরিদ্রের প্রতি কোমলতা সুরা দোহার শিক্ষা

ছবি
  সুরা দোহা অর্থ মধ্যস্থ রশ্মি। এটি পবিত্র কোরআনের ৯৩তম সুরা এবং মক্কায় অবতীর্ণ। এর ১ রুকু, ১১ আয়াত। একবার কিছুদিন ঐশী বাণী বন্ধ থাকায় মুহাম্মদ (সা.) বিমর্ষ হয়ে পড়লে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য বলা হয় তাঁকে পরিত্যাগ করা হয়নি। যে অনাথ ছিল তাকে আশ্রয়, যে ভুল পথে ছিল তাকে পথের হদিস এবং যে অভাবী ছিল তাকে অভাবমুক্ত করা হয়। পিতৃহীন ও সাহায্যপ্রার্থীর প্রতি কঠোর না হয়ে সুরাটিতে আল্লাহর অনুগ্রহ বর্ণনা করতে বলা হয়েছে। মুহাম্মদ (সা.)–এর ওপর কিছুদিন আল কোরআন নাজিল হওয়া বন্ধ ছিল। তখন অবিশ্বাসীরা ঠাট্টা- বিদ্রূপ করতে শুরু করে বলতে লাগল, আজ কিছু নাজিল হয়নি? আসলে আল্লাহ তোমাকে পরিত্যাগ করেছেন, তোমার ওপর অখুশি হয়েছেন। এতে মুহাম্মদ (সা.) কিছুটা বিচলিত ও মর্মাহত হয়ে পড়েছিলেন। মনের কোণে হয়তো এমন চিন্তাও উঁকি দিয়েছিল যে, তাঁর কোনো ভুল হয়ে যাচ্ছে না তো? সেই সময়েই সুরা আদ দোহা নাজিল হয় মুহাম্মদ (সা.)–কে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য এবং কঠিন সময়ে আশার বাণী এবং শক্তি জোগানোর জন্য। সুরা দোহার সারকথা এ সুরার শুরুতে প্রথম আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘শপথ দিনের প্রথম প্রহরের!’ দোহা বলতে এমন একটা সময় বোঝায় যখন দিনের কর্মব্যস্ত...

সুরা কাওসারে তিনটি বিষয়

ছবি
  সুরা কাওসার  (প্রাচুর্য) পবিত্র কোরআনের ১০৮তম সুরা। মক্কায় অবতীর্ণ। ১ রুকু, ৩ আয়াত। অপুত্রক মুহাম্মদ (সা.)-কে নাম নিশানাহীন হতভাগ্য বলে তাঁর শত্রুরা তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রূপ করলে আল্লাহ বলেন যে তাঁকে প্রচুর কল্যাণ দান করা হয়েছে এবং তিনি তাঁর জন্য তাঁর প্রভুর উদ্দেশে নামাজ পড়ুন। প্রকৃতপক্ষে তাঁর শত্রুরাই নাম নিশানাহীন হতভাগ্য। মুহাম্মদ (সা.) এর শিশুপুত্র মারা যাওয়ার পর কাফেররা তাঁর ওই কষ্টকর সময়ে আনন্দ করেছিল এবং বলাবলি করছিল, মুহাম্মদ (সা.) এবার নির্বংশ হয়ে গেল। সাধারণত পুত্রের মাধ্যমে বংশধারার সম্মান, ঐতিহ্য চলমান থাকে। মুহাম্মদ (সা.) এর ছেলেসন্তান মারা যাওয়ার পর তারা বলে বেড়াচ্ছিল যে, মুহাম্মদ (সা.) এর নাম, বংশ, পারিবারিক ঐতিহ্য আর টিকে থাকবে না তাঁর মৃত্যুর পর। এই পরিস্থিতিতে আল্লাহ এই সুরা নাজিল করেন। সুরার সারসংক্ষেপ: সুরা কাওসারের প্রথম  আয়াতে ‘আমি তো তোমাকে কাউসার (ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ) দান করেছি।’ আল্লাহ  হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে কাওসার দান করেছেন। পুত্র সন্তান মারা যাওয়ায় তিনি যে দু:খ পেয়েছিলেন, সান্ত্বনা স্বরূপ আল্লাহ তাঁকে পুরস্কার দানের মাধ্যমে খুশি করে ...

কোরবানির শিক্ষা ত্যাগ ও ধৈর্যের দীক্ষা

ছবি
  কোরবানির অর্থ কাছে যাওয়া, নৈকট্য অর্জন করা ও উৎসর্গ করা। কোরবানির শিক্ষা হলো আত্মত্যাগের শিক্ষা। মহামহিম রাব্বুল আলামিনের সমীপে আত্মসমর্পণের শিক্ষা, তাকওয়া বা প্রভুপ্রেম এবং ইখলাস তথা একনিষ্ঠ আত্মনিবেদনের শিক্ষা। পশু কোরবানি একটি প্রতীক মাত্র। কোরবানির মূল প্রতিপাদ্য হলো মহান রবের জন্য সবকিছু বিসর্জন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকা। মনের মধ্যে যে পশুবৃত্তি বিদ্যমান, তাকে পরাভূত ও পরাজিত করাই হলো পশু জবাই বা পশু কোরবানির আনুষ্ঠানিক শিক্ষা। এর মাধ্যমে মনের সব কালিমা ও চরিত্রের কুস্বভাবকে চিরতরে দূরীভূত করা এবং চিত্তের সব কুপ্রবৃত্তিকে পরিত্যাগ করাই মূল উদ্দেশ্য। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহর নিকট ওদের গোশত ও রক্ত পৌঁছায় না; বরং পৌঁছায় তাঁর কাছে তোমাদের তাকওয়া।’ (সুরা-২২ হজ, আয়াত: ৩৭) তাকওয়াবিহীন কোরবানি আল্লাহ তাআলা কবুল করেন না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি তাদের আদমের পুত্রদ্বয়ের বৃত্তান্ত শোনান। যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল, তখন একজনের (হাবিলের) কোরবানি কবুল হলো, অন্যজনেরটা কবুল হলো না। অবশ্যই আল্লাহ মুত্তাকিনদের কোরবানিই কবুল করেন।’ (সুরা-৫ মায়েদা, আয়াত: ২৭) কোরবানি স্রষ্টার আনুগত্য ও আত্ম...

আমাদের ধর্মে আবু তালিব

ছবি
  আমাদের ধর্মে আবু তালিব ছিল অমুসলিমদের মধ্যে সর্বোচ্চ মর্যাদার। অমুসলিমদের মধ্যে তার উপরে কেউ ছিল না। মক্কায় কুরাইশদের নির্যাতনের সময় তিনি মুসলমানদের ব্যাপক সাহায্য করেছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজ সন্তানের মত দারুণ ভালোবাসতেন। রাসূলের কাছে তিনি পিতার মত ছিলেন। কিন্তু তবু তার কপালে ঈমান জোটেনি। তিনি বংশগত অহমিকার কারণে শেষ পর্যন্ত ইসলাম গ্রহণ করেননি। তিনি তার পিতা আব্দুল মুত্তালিবের পথ পরিত্যাগ করতে প্রস্তুত ছিলেন না। মৃত্যুর সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে অনুরোধ করেন, "ও আমার চাচা! শুধু একটি কালিমা উচ্চারণ করুন। (অর্থাৎ 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলুন।') তাহলে আপনাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করার জন্য আমি আল্লাহর সামনে যুক্তি দেখাতে পারবো।" আবু তালিব বলার জন্য প্রায় মুখ খুলছিলেন। কারণ, তার অন্তরে তিনি জানতেন এ ধর্ম সত্য ধর্ম। তিনি অসংখ্য মিরাকল দেখেছিলেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো- তিনি জানতেন তার ভাইয়ের ছেলে কোন ধরণের মানুষ ছিলেন। তিনি জানতেন তার ভাইয়ের ছেলে মিথ্যা বলতে জানে না। কিন্তু একটি জিনিস তার কাছে তার ভাইয়ের ছেলের...

আমলনামা

ছবি
  আল্লাহ তায়ালা বলেন- فَاَمَّا مَنۡ اُوۡتِیَ کِتٰبَهٗ بِیَمِیۡنِهٖ - অতঃপর যাকে তার আমলনামা তার ডান হাতে দেয়া হবে; فَسَوۡفَ یُحَاسَبُ حِسَابًا یَّسِیۡرًا - অত্যন্ত সহজভাবে তার হিসাব-নিকাশ করা হবে। وَّ یَنۡقَلِبُ اِلٰۤی اَهۡلِهٖ مَسۡرُوۡرًا - এবং সে তার স্বজনদের নিকট আনন্দিত হয়ে ফিরে যাবে। (৮৪: ৭-৯) প্রথম আয়াতে বলা হয়েছে আমলনামা ডান হাতে দেওয়া হবে। ডান হাত দ্বারা কয়েকটি জিনিস বুঝায়। প্রথমত: আক্ষরিক অর্থেই ডান হাত। যদি আপনার ডান হাতে আপনার হিসেবের বই দেয়া হয় তার মানে আপনি পরীক্ষায় ভালো করেছেন। দ্বিতীয়ত: ডান হাত দ্বারা আরবিতে অঙ্গীকার পূরণ করাও বুঝায়। অর্থাৎ, এই মানুষগুলো তাদের ওয়াদা পূরণ করেছে। তারা আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাই তাদেরকেও আজ ডান হাতে বই প্রদান করে সম্মানিত করা হচ্ছে। তৃতীয়ত: ইয়ামিন অর্থাৎ ডান হাত দ্বারা ক্ষমতা এবং স্বাধীনতাও বুঝানো হয়। শেষ বিচারের দিন কারোই কোনো কিছুর উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। কেউ কথা বলছে না। কারো কোনো স্বাধীনতা নেই। কেউ অন্য কাউকে নিয়ে চিন্তা করছে না। সবাই নিজ নিজ চিন্তায় মগ্ন। আর এই লোক যে ডান হাতে তার আমলনামা পেলো সে সবাইকে...

ইসলাম জটিল কোনো ধর্ম নয়

ছবি
  ইসলাম জটিল কোনো ধর্ম নয়। ইসলাম এমন কিছু নয় যা বিমূর্ত, ইসলাম এমন কিছু নয় যা অবাস্তব। ইসলাম খুবই খুবই সহজ। সুপার ইজি। মুক্তির ইসলাম দারুণ সহজ। জান্নাতুল ফিরদাউস সবার জন্য উন্মুক্ত। সর্বোচ্চ জান্নাতে যেতে আপনার ইসলামিক স্টাডিজে ডক্টরেট ডিগ্রি থাকতে হবে না। আল্লাহর ইবাদাত করুন। তাঁর প্রতি ঈমান রাখুন। আল্লাহর রাসূলকে ভালোবাসুন। শেষ বিচারের দিন আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের আশা রাখুন। আর আপনার জীবন যাপন করুন একজন ভালো মানুষ হিসেবে। নৈতিক মানুষ হিসেবে। সুন্দর চরিত্রের মানুষ হিসেবে। একজন দয়ালু মানুষ হিসেবে। একজন দরদী মানুষ হিসেবে। একজন সহানুভূতিশীল মানুষ হিসেবে। নিজের জন্যে যা ভালোবাসেন তা অপর মুসলিম ভাইয়ের জন্যেও ভালোবাসুন। বেশি করে দিন। আর অল্প পেলেও সন্তুষ্ট থাকুন। আপনার আচরণ এবং চরিত্রে একজন রোল মডেলে পরিণত হন। ঠিক এতুটুকুই আপনার দরকার। যদি এটুকু করতে পারেন তাহলে আলহামদুলিল্লাহ! আপনি ইসলামী জীবন ব্যবস্থার সমগ্র অংশটুকু নিজ জীবনে করে দেখিয়েছেন। একথা আমি বলছি না। আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এটি বলেছেন। তিনি কী বলেছেন জানেন? দুইটি শব্দ। মুখস্ত করে রাখুন। "আদ দিইনু মু...

জান্নাতে কার পায়ের শব্দ শুনেছিলেন রাসুল (সা.)

ছবি
  মেরাজের রাতে রাসুল (সা.) জান্নাত পরিদর্শনের সময় হজরত বেলাল ইবনে রাবাহ (রা.)–র পায়ের আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে রাসুল (সা.) হজরত বেলাল (রা.)–কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে বেলাল, ইসলাম গ্রহণের পর তুমি কী এমন কাজ করেছিলে, যে কারণে তুমি জান্নাতে পৌঁছে গেলে? গতরাতে আমি জান্নাতে প্রবেশ করে তোমার পায়ের শব্দ শুনতে পেলাম!’ হজরত বেলাল (রা.) বললেন, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ, আমি এমন কিছুই করিনি। তবে আমি কোনো গুনাহ করলেই দুই রাকাত নামাজ আদায় করি। আর অজু চলে গেলে তখনই আবার অজু করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করি।’কৃষ্ণাঙ্গ সাহাবি হজরত বেলাল (রা.)–র জন্ম মক্কায়। তবে তিনি ছিলেন আবিসিনিয়ার (বর্তমান ইথিওপিয়া) বংশোদ্ভূত। মক্কার প্রভাবশালী কুরাইশ নেতা উমাইয়া ইবনে খালফের ক্রীতদাস ছিলেন তিনি। কুরাইশদের চোখে ক্রীতদাস হিসেবে বেলালের (রা.) ইসলাম গ্রহণ ছিল চরম ধৃষ্টতা। তাঁদের শত বছরের বিশ্বাস, চিন্তা ও আভিজাত্যের প্রতি প্রচণ্ড আঘাত হানে। হজরত বেলাল (রা.)–এর মনিব উমাইয়া তাঁর ইসলাম গ্রহণের কথা জানতে পেরে তাঁকে ইসলাম ত্যাগের জন্য জবরদস্তি করতে থাকেন। তাতে বিফল হওয়ায় উমাইয়ার নির্দেশে বেলাল (রা.)–এর ওপর শু...

কেন আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে?

ছবি
  কেন আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে? —শায়েখ ইয়াসির কাদি বর্তমানে আমরা মানসিক অশান্তি এবং ডিপ্রেশনের এমন এক প্রবল জোয়ার প্রত্যক্ষ করছি, মানব সভ্যতার ইতিহাসে যার আর কোন নজির পাওয়া যায় না। এমনকি আমার বেড়ে উঠার কালেও কিশোর কিশোরীদের এভাবে ডিপ্রেশনে ভুগতে দেখা যায়নি। তরুণ ছেলে মেয়েরা যাদের সামনে সমস্ত জীবন পড়ে আছে তারাই ডিপ্রেশনে ভুগছে! একটু খোঁজ নিলে জানবেন সাইক্রিয়াটিস্ট এবং সাংবাদিকরা 'জীবনে অর্থহীনতার উত্থান' নিয়ে কথা বলছেন। তরুণ তরুণীদের মানসিক বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হচ্ছে, ঔষধ খেতে হচ্ছে। আমি বলছি না যে, ডাক্তারের কাছে যাওয়া খারাপ। কিন্তু আমাদের নিজেদের প্রশ্ন করা উচিত— কেন? কেন আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে? খুবই স্পর্শকাতর একটি সাবজেক্ট। আল্লাহ আমাদের সবাইকে রক্ষা করুন। এই প্রজন্মের তরুণ তরুণীরা যে হারে আত্মহত্যা করছে মানব ইতিহাসের কোনো কালে এমনটি দেখা যায়নি। আর সবকিছু যেভাবে এগোচ্ছে এর মাত্রা আরো খারাপ হবে। আমরা আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি, আমরা আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এখন প্রশ্ন হলো কেন? কেন এই হারে মানুষের মাঝে হতাশা দেখা যাচ্ছে? আমাদের কাছে ব্যাপারটা সুস্পষ্ট। য...

আল্লাহ সম্পর্কে যত চিন্তা

ছবি
  আল্লাহ সম্পর্কে অন্য যত চিন্তা আপনার আছে—এটা মনোযোগ দিয়ে শুনুন—আল্লাহ সম্পর্কে অন্য যত চিন্তা আপনার আছে, আল্লাহ সম্পর্কে অন্য যতো কিছু আপনি শিখবেন, আপনাকে প্রথমে অনুধাবন করতে হবে যে, সেই সকল জিনিস থাকবে এই একটি শব্দের ছায়াতলে। আর তা হলো— أَحَدْ (অদ্বিতীয়)। সকল উপলব্ধি 'আহাদুন' শব্দটির ছায়াতলে থাকবে। কেনো আমি এটা বললাম? খেয়াল করুন— আমি শুনি। আমি দেখি। আমি سَمِيْع (সামি), অর্থাৎ আমি শুনি। আমি بَصِيْر (বাসির), যার অর্থ কী ? আমি দেখি। আমার কিছু জ্ঞান আছে, আমি عَلِيْم (আলীম) ও। কিন্তু سَمِيْع (সামি), بَصِيْر (বাসির), عَلِيْم (আলীম) এগুলো কি আল্লাহরও নাম ? হ্যাঁ, এগুলো আল্লাহর নাম। আল্লাহর একটি নাম হলো رَحِيْم (রহীম), তাই না ? আল্লাহর আরেকটি নাম হলো رَؤُوْف (রউফ)। এই দুটি নাম ব্যবহৃত হয়েছে রাসূল (সঃ) এর জন্যও। আর আল্লাহ রাসূলুল্লাহর ব্যাপারে বলেছেন, بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ (বিল মু’মিনিনা র’উফুর রহীম)। রাসূল (সঃ) এর বর্ণনা দিয়ে আল্লাহ বলেছেন যে, তিনি হলেন ঈমানদারদের প্রতি رَؤُوْف (রউফ) এবং رَحِيْم (রহীম)। مَا غَرَّكَ بِرَبِّكَ الْكَرِيمِ (মা গররাকা বি রব্বিকাল কারীম)। ...