Posts

Showing posts from June, 2024

সূরাতুল হাক্কায় প্রথম আয়াত ,একটি শব্দ "আল-হাক্কাহ"

Image
  আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা সূরাতুল হাক্কায়, সূরাটি শুরু করেন খুবই অদ্ভুত এক প্রশ্ন দিয়ে। বস্তুতঃ এটি একটি বিবৃতি। প্রথম আয়াত শুধু একটি শব্দ "আল-হাক্কাহ"। যার কয়েকটি অর্থ আছে। কিন্তু খুব সহজে অর্থটাকে এভাবে ভাবতে পারেন-- রিয়্যালিটি বা বাস্তবতা। আল্লাহ বলেছেন, বাস্তবতা। "মালহাক্কাহ।" বাস্তবতা কী? "ওয়া মা আদরা-কামাল হাক্কাহ।" আর কীসে তোমাকে জানাবে যে বাস্তবতা কী জিনিস। সেই প্রশ্নটি করার উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ এই সূরাতে দাবী করছেন যে, অধিকাংশ মানুষ বাস্তবতায় বাস করে না। অধিকাংশ মানুষ তাদের নিজস্ব ভার্সন নিয়ে উপস্থিত হয়-- কোনটা বাস্তব এবং কোনটা গুরুত্বপূর্ণ। আর সেটাই ঠিক করে দেয় তাদের যাপিত জীবনটি কেমন হবে। তাই, আল্লাহ এই সূরায় প্রত্যেকটি মানুষকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন, তারা যেন একটু পেছনে সরে গিয়ে আবারো "বাস্তবতা" নিয়ে একটু চিন্তা করে। আমরা সকালে জেগে উঠি। নিজেদের চেতনা পুনরায় ফিরে পাই। তৎক্ষণাৎ খুবই বাস্তব কিছু কাজ আমাদের সামনে পড়ে থাকে। আছে চাকরি, আছে পরিবার, আছে দায়-দায়িত্ব। এখন আরও আছে সেহরি। এভাবে বিভিন্ন কাজ-কর্মে আমরা প্রত্যহ জড়িয়ে পড়ি। দৈনন্দিন ক

কোরবানির ইতিহাস এবং কোরআনের শিক্ষা

Image
  কোরবানির ইতিহাস অত্যন্ত প্রাচীন। কোরআন থেকেই হজরত আদম (আ.) দুই ছেলে হাবিল–কাবিলের ঘটনার সূত্রে আমরা পৃথিবীর প্রথম কোরবানির খবর জানতে পারি। হাবিল–কাবিলের ঘটনায় দেখা যায়, আকাশ থেকে আগুনের ঝলক নেমে এসে হাবিলের জবাই করা কোরবানি পশুটি আল্লাহ গ্রহণ করেছিলেন। অন্যদিকে কাবিলের কোরবানিটি প্রত্যাখ্যাত হয়। কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ত তুমি তাদেরকে যথাযথভাবে শুনিয়ে দাও, যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো এবং অন্যজনের কোরবানি কবুল হলো না। তাদের একজন বলল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব। অপরজন বলল, আল্লাহ তো সংযমীদের কোরবানিই কবুল করে থাকেন।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত: ২৭) সব জাতির মধ্যেই ছিল কোরবানির বিধান। কোরআনে আল্লাহ বলছেন ‘আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য (কোরবানির) নিয়ম করে দিয়েছি যাতে আমি তাদের জীবনের উপকরণ হিসেবে যেসব গবাদিপশু নিয়েছি সেগুলো জবাই করার সময় তারা আল্লাহর নাম নেয়। তোমাদের উপাস্য তো একমাত্র আল্লাহ্। সুতরাং তাঁরই কাছে আত্মসমর্পণ করো ও সুসংবাদ দাও বিনীতদের, যাদের হৃদয় আল্লাহর নাম করা হলে ভয়ে কাঁপে, যারা তাদের বিপদ- আপদে ধৈর্য ধরে ও নামা

আল্লাহর কাছে কারো মূল্য

Image
  আমাদের সমাজে একজন মানুষের দাম নির্ধারিত হয় টাকার মূল্যে। যে যত বেশি টাকা আয় করে সমাজে তার তত বেশি দাম। আমাদের কোনো ধারণাই নেই যে, আল্লাহর কাছে কারো মূল্য কিভাবে নির্ধারিত হয়। আপনার সত্যিকারের মূল্য নির্ধারিত হয় আপনি কতটুকু জান্নাত অর্জন করতে পেরেছেন তার উপর। জান্নাতের চেয়ে উত্তম কিছুর অস্তিত্ত্ব নেই। জান্নাতের চেয়ে উত্তম কোনো পুরস্কারের অস্তিত্ত্ব নেই। এ জন্য মদিনার নতুন মুসলমানেরা যখন মক্কায় এসে রাসূলুল্লাহ (স) কে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, অর্থাৎ আকাবার শপথের পর, তাঁরা জিজ্ঞেস করেছিলেন তাদের পুরস্কার কী হবে? এ সাহায্যের বিনিময়ে তারা কী পাবে? উত্তরে রাসূল (স) বলেছিলেন, জান্নাত। জান্নাত তোমাদের পুরস্কার। তিনি তাদের বলেননি, যদি তোমরা আমাকে সাহায্য করো তাহলে আমরা এক সাথে পারস্য এবং রোমান সাম্রাজ্য জয় করবো। ফলে তোমরা প্রত্যেকে বিশাল ধনী হয়ে যাবে। না। তিনি এমনটি বলেননি। তিনি বলেছিলেন, তোমাদের পুরস্কার হলো জান্নাত। এমনকি কুরআনেও আল্লাহর পথে সংগ্রাম করার পুরস্কার হিসেবে প্রথমে জান্নাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। দুনিয়ার বিজয়ের কথা সেকেন্ডারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দুনিয়ার বিজ

প্রতিটি শব্দের ঢেউ আছে

Image
   অনেক সময় আমরা বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে পড়ি আর এসব কাজের দীর্ঘ মেয়াদি ফল নিয়ে চিন্তা করি না। আল্লাহ তায়ালা সূরা আলে ইমরানের ১৮২ নাম্বার আয়াতে বলেন - ذَٰلِكَ بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيكُمْ - "এ হল তারই প্রতিফল যা তোমরা ইতিপূর্বে নিজের হাতে পাঠিয়েছ।" এই আয়াত আমাদেরকে যে দৃষ্টিতে পৃথিবী দেখা শেখাচ্ছে তা হলো: প্রতিটি শব্দ যে আমি উচ্চারণ করি, আমার করা প্রতিটি কাজ, আমার প্রতিটি অভিজ্ঞতা, যা কিছু আমি খরচ করি, যা কিছু আমি উপভোগ করি, যে মজা আমি এখন উপভোগ করি, যে মজা থেকে আমি এখন বিরত থাকি - এই সবকিছুর ভবিষ্যতে ফলাফল আছে। সবকিছুর। একটি উদাহরণ দিচ্ছি। যদি ছোট্ট একটি ইটের টুকরা নিয়ে পানিতে নিক্ষেপ করেন, কী হয়? পানিতে ছোট ছোট ঢেউ দেখা যায়। প্রতিটি নুড়ি পাথরের ঢেউ আছে, প্রতিটি শব্দের ঢেউ আছে, প্রতিটি দয়ার ঢেউ আছে, প্রতিটি অপমানকর কথার ঢেউ আছে, প্রতিটি মূর্খতার ঢেউ আছে, প্রতিটি পাপের ঢেউ আছে, প্রতিটি ভালো কাজের ঢেউ আছে। আমাদের করা প্রতিটি কাজের ঢেউ আছে। আল্লাহ তায়ালা সূরা ইয়াসিনে বলেছেন - " ওয়া নাকতুবু মা কাদ্দামু ওয়া আ-সারাহুম" - আমি লিখে রাখছি তারা যা ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করে

আল্লাহ মুসলিমদের সাথে কীভাবে ডিল করেন

Image
   আল্লাহ মুসলিমদের সাথে কীভাবে ডিল করেন তা একেবারেই সুস্পষ্ট। ব্যাপারটা বুঝতে আপনাদের একটু পেছনে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের আগের উম্মাহ ছিল বনী ইসরাইল। বনী ইসরাইলের সাথে আমাদের অনেক মিল রয়েছে। বনী ইসরাইলের প্রধান রাসূল ছিলেন মূসা আলাইহিস সালাম। কুরআনে সর্বাধিক উল্লেখিত রাসূল। আল্লাহ কুরআনে মূসা আলাইহিস সালামের নাম এতবার উল্লেখ করেছেন কার জন্য? ইসরাইলীদের জন্য নাকি আমাদের জন্য? আমাদের জন্য। আল্লাহ ইসরাইলীদের সম্পর্কে আমাদের জানাচ্ছেন, وَ لَقَدۡ اٰتَیۡنَا بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ الۡکِتٰبَ وَ الۡحُکۡمَ وَ النُّبُوَّۃَ وَ رَزَقۡنٰهُمۡ مِّنَ الطَّیِّبٰتِ وَ فَضَّلۡنٰهُمۡ عَلَی الۡعٰلَمِیۡنَ -- আমি বানী ইসরাঈলকে কিতাব, রাজত্ব ও নবুওয়াত দিয়েছিলাম আর তাদেরকে দিয়েছিলাম উত্তম রিযক, আর তাদেরকে বিশ্ববাসীর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছিলাম। (৪৫:১৬) কিন্তু তারা আল্লাহর অবাধ্য হলো। আর আল্লাহর নবীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো। তারা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করলো বহু সংখ্যক বার। আল্লাহ তায়ালা বলেন- لُعِنَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنۡۢ بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ عَلٰی لِسَانِ دَاوٗدَ وَ عِیۡسَی ابۡنِ مَرۡیَمَ ؕ ذٰلِکَ بِ

সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যা আরোপকারীদের

Image
  সুরা মুরসালাত পবিত্র কোরআনের ৭৭তম সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ। এতে ২ রুকু ও ৫০ আয়াত। মুরসালাত অর্থ হলো প্রেরিত। এই সুরায় মুরসালাত বলতে ওই ফেরেশতাদের বোঝানো হয়েছে, আল্লাহ যাদের বিশ্ব পরিচালনা ও শরিয়াহ–সংক্রান্ত বিষয় দিয়ে প্রেরণ করেন।  ইবনে আব্বাস (রা.) তাঁর মায়ের বরাতে বর্ণনা করেছেন যে তাঁর মা নবী (সা.)-কে মাগরিবের নামাজে সুরা মুরসালাত পড়তে শুনেছেন। (মিশকাত, হাদিস: ৮৩২) এ সুরার বিষয় কিয়ামত অবশ্যম্ভাবিতা। সুরা আর রাহমানে যেমন প্রতিটি নিয়ামতের উল্লেখের পর ‘অতঃপর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?’ আয়াতটি ফিরে ফিরে এসেছে, এই সুরাতেও তেমনি ‘সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যা আরোপকারীদের জন্য’ কথাটি ১০ বার এসেছে।এ সুরার শুরুতে আল্লাহ চারবার বায়ুর শপথ এবং পঞ্চমবার ফেরেশতাদের শপথ করে বলেন, ‘শপথ (সেই বায়ুর, যাদের) একের পর এক আলতো করে ছেড়ে দেওয়া হয়, যারা ঝড়ের বেগে ধেয়ে যায়! শপথ তাদের, যারা উড়িয়ে নিয়ে যায় ও ছড়িয়ে ছিন্নভিন্ন করে, তারপর পাঠায় এক অনুশাসন! যাতে ওজর–আপত্তির অবকাশ না থাকে ও তোমরা সতর্ক হও। তোমাদের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তা আসবেই। যখন তারার আলো যাবে নিভে, য

‘বাকারা’ পবিত্র কোরআনের দ্বিতীয় সুরা

Image
  বাকারা অর্থ গাভি। এই সুরার এক স্থানে গাভি নিয়ে একটি ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে। সুরাটি পবিত্র মদিনায় অবতীর্ণ হয়। এতে ৪০ রুকু, ২৮৬ আয়াত আছে। সুরা বাকারার ২৫৫ নম্বর আয়াত ‘আয়াতুল কুরসি’ নামে পরিচিত। এটি কোরআন শরিফের প্রসিদ্ধ আয়াত। পুরো আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদ, মর্যাদা ও গুণের বর্ণনা থাকায় আল্লাহ–তাআলা এ আয়াতের মধ্যে অনেক ফজিলত রেখেছেন। এ সুরার শেষ দুটি আয়াতের (২৮৫-২৮৬) রয়েছে বিশেষ ফজিলত ও তাৎপর্য। সুরা বাকারাকে মোটাদাগে ৯ ভাগে ভাগ করা যায়। ১ম ভাগ: ইমান থাকা, না থাকা। (আয়াত ১-২০) ২য় ভাগ: সৃষ্টি ও জ্ঞান। (আয়াত ২১-৩৯) ৩য় ভাগ: বনি ইসরাইল জাতির প্রতি প্রেরিত আইনকানুন। (আয়াত ৪০-১০৩) ৪র্থ ভাগ: ইবরাহিম (আ.)–এর ওপর পরীক্ষা ও তাঁর জাতি। (আয়াত ১০৪-১৪১) ৫ম ভাগ: নামাজের দিক পরিবর্তন। (আয়াত ১৪২-১৫২) ৬ষ্ঠ ভাগ: মুসলিম জাতির ওপর পরীক্ষা। (আয়াত ১৫৩-১৭৭) ৭ম ভাগ: মুসলিম জাতির প্রতি প্রেরিত আইনকানুন। (আয়াত ১৭৮-২৫৩) ৮ম ভাগ: সৃষ্টি ও জ্ঞান। (আয়াত ২৫৪-২৮৪) ৯ম ভাগ: ইমান থাকা, না থাকা। (আয়াত ২৮৫-২৮৬) ১ম ভাগ: ইমান থাকা, না থাকা শুরুর দিকে আল্লাহ কোরআন শরিফকে হেদায়াত ও সঠিক দিকনির্দেশনা হিসেবে মানব জাতির সামনে উপস্

হজরত জাবের (রা.)

Image
  এক সামরিক অভিযান থেকে ফেরার পথে রাসুলুল্লাহ (সা.) খেয়াল করলেন হজরত জাবের (রা.) বৃদ্ধ এক উটের পিঠে সওয়ার হয়ে আছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন সবার আগে, আর জাবের (রা.) সবার পেছনে। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর উটের গতি কমিয়ে দিয়ে সবাইকে এগিয়ে যেতে বললেন। রাসুল (সা.) তাঁর উটটির গতি কমিয়ে দিয়ে জাবের (রা.)–এর কাছে এলেন। একপর্যায়ে তাঁরা পাশাপাশি চলতে শুরু করলেন। রাসুল (সা.) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, মাহইয়াম? এর অর্থ, তুমি ঠিক আছ তো? উত্তরে জাবের (রা.) বললেন, ‘আমার বাবা মারা গেছেন। তিনি অনেক টাকা ঋণ রেখে গেছেন। আমাকে সাত বোনের দেখাশোনা করতে হয়।’ এরপর তিনি তাঁকে নিজের জীবনকাহিনি শোনালেন।  রাসুল (সা.) লক্ষ করলেন, জাবেরের জামায় একটি শুকনো দাগ। সে সময়ে সুগন্ধি ব্যবহার করলে জামায় তার দাগ লেগে থাকত। রাসুল (সা.) জানতে চাইলেন, এটা কী?  জাবের বললেন, ‘আমি কিছুদিন আগে বিয়ে করেছি।’ এরপর রাসুল (সা.) বললেন, তুমি কি তোমার বয়সী কাউকে বিয়ে করেছ, নাকি বয়স্ক কাউকে? তিনি বললেন, আমি একটু বয়সী এক নারীকে বিয়ে করেছি।  রাসুল (সা.) বললেন, তোমার বয়সী কাউকে বিয়ে করলে না কেন? জাবের (রা.) বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি বয়সী একজনকে বিয়ে ক

আবু উবাইদা (রা.)–এর উপদেশ

Image
  হজরত উমর (রা.) খলিফা নিযুক্ত হয়ে ইয়ারমুকের যুদ্ধে আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ (রা.)–কে সেনাপ্রধান নিয়োগ করেন। তিনিও অসম্ভব দক্ষতার সঙ্গে এ যুদ্ধে মুসলিমদের পক্ষে বিজয় ছিনিয়ে আনেন। ১৮ হিজরিতে সিরিয়া অঞ্চলে মহামারি আকারে প্লেগ দেখা দিলে তাতে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। আবু উবাইদা (রা.)–এর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে তিনি তাঁর সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘তোমাদের যে উপদেশ আমি দিচ্ছি। তোমরা যদি তা মেনে চলো, তাহলে সব সময় কল্যাণের পথে থাকবে। —তোমরা নামাজ কায়েম করবে। —রমজান মাসে রোজা রাখবে। —জাকাত দেবে। —হজ ও ওমরাহ আদায় করবে। —একে অন্যকে উপদেশ দেবে। —তোমাদের শাসক ও নেতাদের সত্য ও ন্যায়ের কথা বলবে, তাদের কাছে কিছু গোপন রাখবে না। —দুনিয়ার সুখ–সম্পদে গা ভাসিয়ে দেবে না।কোনো ব্যক্তি যদি হাজার বছরও জীবন লাভ করে, আজ আমার পরিণতি তোমরা দেখতে পাচ্ছ, তারও একই পরিণতি হবে।’ ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে আবু উবাইদা (রা.)–এর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী জেরুজালেম অবরোধ করে। খ্রিষ্টান ধর্মগুরু সাফ্রোনিয়াস জিজিয়া করের বিনিময়ে জান, মাল, গির্জা ও বাসস্থানের নিরাপত্তা দেওয়ার শর্তে মুসলিমদের সঙ

যারা শিশু সন্তান হারিয়েছেন

Image
  যারা শিশু সন্তান হারিয়েছেন তাদের জন্য খুবই সান্ত্বনাদায়ক হাদিস ----------------------- * ----------------------- শেষ বিচারের দিন শিশুদের শাফায়াত করার অধিকার থাকবে। যারা শৈশবে মারা গেছে। আর তাদের মাতা-পিতারা সে সময় ধৈর্য ধারণ করেছে। এসব শিশুদের শেষ বিচারের দিন শাফায়াত করার অধিকার দেওয়া হবে। আর অবশ্যই তারা তাদের পিতা-মাতার জন্য শাফায়াত করবে। এ সম্পর্কে বহু হাদিস আছে। তার মধ্যে মুসলিম শরীফের বিখ্যাত একটি হাদিস। রাসূলুল্লাহ (স) মহিলাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। প্রসঙ্গত: এটা রাসূলুল্লাহ (স) এর সুন্নাহ ছিল, তিনি মহিলাদের উদ্দেশ্যে নিয়মিত বক্তব্য প্রদান করতেন। বুখারী শরীফের একটি হাদিসে বর্ণিত আছে। মহিলারা রাসূলুল্লাহ (স) এর নিকট অভিযোগ করে বলেন- ইয়া রাসূলাল্লাহ! পুরুষেরা সব সময় আপনাকে প্রশ্ন করার সুযোগ পায়। আমাদের সময় হয় না। অতঃপর তিনি প্রতি সপ্তাহে একবার মহিলাদের জন্য সময় নির্ধারণ করেন। (আমার এটা বলা উচিত না। আমি বোনদের জন্য মাসে একবার সময় প্রদান করি। তিনি করেছিলেন সপ্তাহে একবার। তিনি তো ছিলেন আল্লাহর রাসূল। তাঁর মাকাম আমাদের সবার চেয়ে উচ্চে। আমার পক্ষে সপ্তাহে একবার করা সম্ভব না

সিরাতল মুস্তাকিম থেকে অন্যদিকে

Image
  একটি ভালো দিন...আপনি সকালে উঠে মসজিদে গেলেন। কিছু কুরআন তিলাওয়াত করলেন। অন্তর বিগলিত করে অকৃত্রিম কিছু দোয়া করলেন। কিছু খারাপ কাজ আপনার অভ্যাসের অংশ হয়ে গিয়েছে কিন্তু আজ সেগুলো থেকেও দূরে থাকলেন। মানুষকে কষ্ট দিয়ে কোনো কথা বললেন না। কোনোভাবে কারো কোনো ক্ষতি করলেন না। এভাবে যোহর পর্যন্ত পৌঁছে গেলেন। এখন, অনুভব করছেন আপনি আগের চেয়ে আল্লাহর অনেক কাছাকাছি আছেন। অন্তরে এক ধরণের স্বর্গীয় প্রশান্তি অনুভব করছেন। নিজের উদ্বেগ উৎকণ্ঠাগুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। এরপর... কেমন করে যেন মনোবল কমে গেল। ভাবলেন, আমার হাতে কিছুটা ফ্রি সময় আছে। মুভি বা কিছু একটা দেখে একটু বিনোদন করি এবং শুরু করলেন। ব্যাস! সিরাতল মুস্তাকিম থেকে অন্যদিকে মোড় নিলেন। শয়তান বিশাল এক সুযোগ পেয়ে গেলো। শয়তান সাথে সাথে আপনাকে অনুসরণ করা শুরু করে, পথভ্রষ্ট করার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে থাকে। আপনি হয়ে পড়েন তার এক নম্বর প্রজেক্ট। সে সবকিছু ছেড়ে আপনার পেছনে লাগে। এতক্ষণ সে কিন্তু পারেনি। কারণ, আমাদের রাসূল (স) বলেছেন— "আল্লাহর জিকির হলো 'হিসনুল হাসিন' একটি সংরক্ষিত দুর্গ যা তোমাদেরকে বিতাড়িত শয়তান থেকে রক্ষা করবে।&qu

কুরআনে বর্ণিত সবচেয়ে বিস্তারিত ঘটনা

Image
  কুরআনে বর্ণিত ঘটনাগুলো নিয়ে আমি কিছু কথা বলতে চাই। এ ক্ষেত্রে একটি ব্যাপার লক্ষ্য করবেন যে, একই ঘটনা বিভিন্ন সূরাতে বার বার এসেছে। শুধু ইউসুফ (আ) এর ঘটনা ব্যতীত কোনো ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা এক স্থানে উপস্থাপন করা হয়নি। অর্থাৎ, ইউসুফ (আ) এর সম্পূর্ণ ঘটনা একটি সূরাতে একত্রে বর্ণনা করা হয়েছে। কোন সূরাতে? সূরা ইউসুফে। কিন্তু, মূসা (আ) এর ঘটনা এভাবে এক সূরায় একত্রে বর্ণনা করা হয়নি। তাঁর ঘটনা বিভিন্ন সূরাতে বিভিন্নভাবে এসেছে। বনী ইসরাইলের সকল ঘটনাও এক সূরাতে একত্রে তুলে ধরা হয়নি। ইব্রাহিম (আ) এর ঘটনাও এক স্থানে আসেনি। আদম (আ) এর ঘটনাও সমগ্র কুরআন জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এসেছে এবং পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। তাহলে এখানে দুইটি ইস্যু। এক, ঘটনাগুলো কুরআনের বেশ কয়েক জায়গাতে এসেছে। দুই, একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে বা ঘটনার কিছু অংশ কয়েকবার তুলে ধরা হয়েছে। এখন, কেউ প্রথম প্রথম কুরআন পড়তে এলে তার মনে প্রশ্ন জাগ্রত হয়, এই রিপিটিশনের কারণ কী? ঘটনাগুলো এভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বর্ণনা করার কারণ কী? কেন মূসা (আ) এর সকল ঘটনা এক সূরাতে একত্রে বর্ণনা করা হয়নি? সূরাটির নাম দেওয়া যেত সূরা মূসা। এভাবে আসেনি। কেন? কুরআন

হৃদয় থেকে হৃদয়ে

Image
  হৃদয় থেকে হৃদয়ে - নোমান আলী খান মুসলমানদের মাঝে অন্য মুসলিমদের নিয়ে বহু পূর্বানুমান কাজ করে। কেউ কিছু একটা নিয়ে কথা বলার সাথে সাথে আমরা অনুমান করে বসি- "ওহ! সে তো মনে হয় চরমপন্থী গ্রূপের।" অথবা এ অনুমান না করলে অন্যটা করি- "ওহ! সে তো মনে হয় প্রগ্রেসিভ মুসলিম। ওহ! লোকটা তো মনে হয় অমুক দলের।" আর আপনি যদি এ দলগুলোর কোনো একটার প্রতি কিছু দয়া, সহমর্মিতা বা তাদের কিছুটা বোঝার চেষ্টা করেন তখন অন্যরা আপনাকেও অমুক দলের মেম্বার মনে করা শুরু করে। এভাবে তীব্র একটা ভয় কাজ করে। আগে আমাকে খুঁজে দেখতে হবে সে কোন দল থেকে এসেছে। আমাকে নিশ্চিত করতে হবে আমি যেন বর্ডারের অন্য পাশে পড়ে না যাই। এইসব দলাদলির সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি কি জানেন? এর ফলে আমাদের ধর্মের সত্যিকারের সুন্দর শিক্ষাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। আমার অভিমতে, কুরআন তিলাওয়াত করা হচ্ছে। মানুষ শিখছে এবং অন্যদের শেখাচ্ছে। বহু ভালো ভালো কাজ হচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদের দ্বীনের সত্যিকারের স্পিরিট, মানুষের অন্তরে যে মনোভাব এর গড়ে তোলার কথা, অন্তরের যে চিকিৎসা এর করার কথা- তা কোথায়? তার দেখা কোথায় মিলছে? আমার ক্ষেত্রে...