Posts

Showing posts from August, 2024

উম্মাহকে জাগিয়ে তোলার জন্য

Image
  উম্মাহকে জাগিয়ে তোলার জন্য আমাদের প্রত্যেকেরই যার যার জায়গা থেকে ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে। আমরা যদি বুঝতে পারি যে, ইসলামের মাঝে বিভিন্ন দলের বৈচিত্রময় উপস্থিতি প্রাকৃতিক এবং প্রতিটি গ্রূপ যার প্রতি আহ্বান করছে তা আসলে বৃহত্তর ইসলামিক পরিমন্ডলের ভেতরে থেকেই তারা করছে। এগুলো ইসলামের বাইরের কিছু নয়। এগুলো সবই খাইর। সবই উম্মাহর জন্য কল্যাণকর। আমি নাম উল্লেখ করেই বলছি। কারণ আমি কারো সমালোচনা করছি না। বরং সবার প্রশংসা করছি। যেমন--দেওবন্দী আন্দোলন। মাশাআল্লাহ! হানাফী ফিকহ রক্ষার জন্য তারা কি অসাধারণ কাজই না করছে। উম্মাহর প্রতি তাদের এক নম্বর অবদান হলো তারা কুরআন মুখস্ত করার প্রতি জোর প্রদান করে। তাদের আরো অসংখ্য ভালো কাজ রয়েছে। কিন্তু তাদের এই একটি কাজের জন্য উম্মাহ তাদের নিকট চিরঋণী। যেখানেই তারা যাক মাশাআল্লাহ তাবারাকাল্লাহ সেখানেই হুফ্ফাজ ছড়িয়ে দিচ্ছে। দেওবন্দী আন্দোলনের জন্য আমরা আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞ। তাবলীগি জামায়াত। মাশাআল্লাহ তাবারাকাল্লাহ সুন্দর চরিত্রের মানুষদের জামায়াত। তাদের সাথে মিশলেই বিশুদ্ধতার একটি অনুভূতি আঁচ করতে পারেন। সরলতার একটি অনুভূতি আঁচ করতে পারেন। অধ্যাত্মিকতার এ

মুক্তো দিয়ে তৈরি এক বাড়ি

Image
  আমাদের মা বোনেরা বাসার কাজ-কর্ম করতে করতে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েন। রান্না-বান্না, ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, ছেলে-মেয়েদের যত্ন নেয়াসহ বিভিন্ন কাজে সারাদিন আপনাদের ব্যস্ততায় কাটাতে হয়। আপনাদের এই কষ্টগুলো আল্লাহ তায়ালা দেখেন। তাইতো তিনি রাসূলুল্লাহর সিরাতে আপনাদের জন্য খুবই অনুপ্রেরণাদায়ক একটি ঘটনা সংরক্ষিত করে রেখেছেন। যেন কিয়ামত পর্যন্ত যত ইমানদার মা-বোনেরা দুনিয়াতে আসবেন সবাই এখান থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারেন। জান্নাতে হযরত খাদিজা (রা) এর জন্য বিশেষ প্রাসাদ (সকল কর্মক্লান্ত মা বোনেরা এখান থেকে অনুপ্রেরণা পেতে পারেন) — ড. ইয়াসির কাদি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা খাদিজা (রা)কেও একটি বিশেষ প্রাসাদ প্রদানের অঙ্গীকার করেন। সহিহ বুখারির একটি বিখ্যাত হাদিস। আমি সিরাতের আলোচনায় এটি নিয়ে কয়েকবার আলোচনা করেছি। আমাদের রাসূল (স) তখন মক্কায় ছিলেন, খাদিজা (রা) এর বাড়িতে। খাদিজা (রা) কোনো কাজে বাড়ির বাহিরে ছিলেন। জিব্রিল (আ) বাড়িতে এলেন। জিব্রিল (আ) রাসূল (স) এর সাথে কথা বলছিলেন। জিব্রিল রাসূল (স)কে বললেন, "ও আল্লাহর রাসূল! খাদিজা আসছে।" খাদিজা তখন বাড়ির ভেতরে ছিলেন না। তিনি

সূরা আস-সেজদা

Image
  সূরা আস-সেজদার ১৬তম আয়াতে আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা মুমিনদের একটি গুণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, تَتَجَافٰی جُنُوۡبُهُمۡ عَنِ الۡمَضَاجِعِ یَدۡعُوۡنَ رَبَّهُمۡ خَوۡفًا وَّ طَمَعًا ۫ وَّ مِمَّا رَزَقۡنٰهُمۡ یُنۡفِقُوۡنَ - "তারা তাদের (দেহের) পার্শ্বগুলো বিছানা থেকে আলাদা করে (জাহান্নামের) ভীতি ও (জান্নাতের) আশা নিয়ে তাদের প্রতিপালককে ডাকে, আর আমি তাদেরকে যে রিযক দিয়েছি তাত্থেকে (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে।" 'তাতাজাফা' এসেছে 'জাফু' থেকে। আর 'জাফু' অর্থ, এক স্থানে শান্ত হয়ে অবস্থান না করা। মানে--আপনি স্থান পরিবর্তন করেন কারণ অস্থির ফিল করছেন। বিশ্রাম নিতে পারছেন না। যেমন, বিছানায় শুয়ে বার বার এদিক ওদিক পার্শ্ব পরিবর্তন করা। تَتَجَافٰی جُنُوۡبُهُمۡ তাদের (দেহের) পার্শ্বগুলো সদা অস্থির। عَنِ الۡمَضَاجِعِ --বিছানা থেকে আলাদা হয়ে। তারা ঘুমাতে পারছে না। চিত্তটা তাদের অস্থির। ধরুন, কারো সন্তান বিদেশ থাকে। তারা খবর পেল সে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তখন তার পিতা-মাতার কী অবস্থা হবে? তারা বার বার ফোন করে খবর নিচ্ছেন। কিছু আপডেট তারা জানলেন। তবু রাতে কি তারা ঘুম

শান্তির নিবাস মানে জান্নাত

Image
  আল্লাহ তায়ালা সূরা আস-সেজদার ১৭ তম আয়াতে বলেন--فَلَا تَعۡلَمُ نَفۡسٌ مَّاۤ اُخۡفِیَ لَهُمۡ مِّنۡ قُرَّۃِ اَعۡیُنٍ ۚ جَزَآءًۢ بِمَا كَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ -- "অতঃপর কোন ব্যক্তি জানে না তাদের জন্য চোখ জুড়ানো কী জিনিস লুকিয়ে রাখা হয়েছে, তারা যা করত, তার বিনিময়স্বরূপ।" হাদীসে কুদসীতে উদ্ধৃত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ বলেন, আমার সৎকর্মশীল বান্দাদের জন্য আমি এমনসব জিনিস তৈরী করে রেখেছি যা কখনো কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শোনেনি এবং কোন মানুষ কোনদিন তা কল্পনাও করতে পারে না।” [বুখারী: ৪৭৭৯; মুসলিম: ১৮৯, ২৪২৪] হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মূসা আলাইহিস সালাম আল্লাহ্‌কে বললেন, জান্নাতে কার অবস্থানগত মর্যাদা সবচেয়ে সামান্য হবে? তিনি বললেন, সে এক ব্যক্তি, তাকে সমস্ত জান্নাতীরা জান্নাতে প্ৰবেশ করার পরে জান্নাতের নিকট নিয়ে আসা হবে। তাকে বলা হবে, জান্নাতে প্ৰবেশ কর। সে বলবে, হে রব! সবাই তাদের স্থান নিয়ে নিয়েছে। তারা তাদের যা নেবার তা নিয়েছে। তখন তাকে বলা হবে, তুমি কি সন্তুষ্ট হবে, যদি তোমাকে দুনিয়ার বাদশাদের রাজত্

'তাতাজাফা'

Image
  সূরা আস-সেজদার ১৬তম আয়াতে আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা মুমিনদের একটি গুণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, تَتَجَافٰی جُنُوۡبُهُمۡ عَنِ الۡمَضَاجِعِ یَدۡعُوۡنَ رَبَّهُمۡ خَوۡفًا وَّ طَمَعًا ۫ وَّ مِمَّا رَزَقۡنٰهُمۡ یُنۡفِقُوۡنَ - "তারা তাদের (দেহের) পার্শ্বগুলো বিছানা থেকে আলাদা করে (জাহান্নামের) ভীতি ও (জান্নাতের) আশা নিয়ে তাদের প্রতিপালককে ডাকে, আর আমি তাদেরকে যে রিযক দিয়েছি তাত্থেকে (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে।" 'তাতাজাফা' এসেছে 'জাফু' থেকে। আর 'জাফু' অর্থ, এক স্থানে শান্ত হয়ে অবস্থান না করা। মানে--আপনি স্থান পরিবর্তন করেন কারণ অস্থির ফিল করছেন। বিশ্রাম নিতে পারছেন না। যেমন, বিছানায় শুয়ে বার বার এদিক ওদিক পার্শ্ব পরিবর্তন করা। تَتَجَافٰی جُنُوۡبُهُمۡ তাদের (দেহের) পার্শ্বগুলো সদা অস্থির। عَنِ الۡمَضَاجِعِ --বিছানা থেকে আলাদা হয়ে। তারা ঘুমাতে পারছে না। চিত্তটা তাদের অস্থির। ধরুন, কারো সন্তান বিদেশ থাকে। তারা খবর পেল সে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তখন তার পিতা-মাতার কী অবস্থা হবে? তারা বার বার ফোন করে খবর নিচ্ছেন। কিছু আপডেট তারা জানলেন। তবু রাতে কি তারা ঘু

দুনিয়ার পরিস্থিতি যত খারাপই হোক...

Image
  দুনিয়ার পরিস্থিতি যত খারাপই হোক না কেন, আপনার অন্তর যদি আখিরাত নিয়ে মগ্ন থাকে, আপনার অন্তর যদি আল্লাহর ভালোবাসায় সিক্ত থাকে—তখন লক্ষ্য করবেন আপনার হৃদয় কখনো হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে না, পরকালে ভালো কিছু পাওয়ার আশায় অন্তরটি সবসময় আলোকিত থাকে। আশার প্রদীপটি কখনো নিভে যায় না। পক্ষান্তরে দেখুন, আপনি যদি স্রষ্টায় অবিশ্বাসী হয়ে থাকেন, জীবনে যদি ধর্মকর্ম অনুপস্থিত থাকে, যদি আপনার সমগ্র অস্তিত্ত্ব শুধুই দুনিয়ার এ জীবন নিয়ে কিন্তু তবু দুনিয়া আপনার ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে গেলো, দুনিয়াতে ব্যর্থ হলেন—তখন আপনি ভয়াবহ এক সমস্যায় নিপতিত হবেন। হতাশার অমানিশা চার দিক থেকে আপনাকে ঘিরে ধরবে। ডিপ্রেশনে পড়ে যাবেন। এমনকি আত্মহত্যার মতো জঘন্য সম্ভাবনাও দেখা দিবে। সব ধরণের নেতিবাচক অনুভূতিগুলো আপনার অন্তরে জেঁকে বসবে। কিন্তু যদি দুনিয়ার জীবনটাকে পরকালের সাথে যুক্ত করেন... যখন উপলব্ধি করবেন যে, হ্যাঁ, আমি দুনিয়াতে সফল হতে চাই, কিন্তু যদি কোনো কারণে ব্যর্থ হই, আমার জন্য তো পরকাল আছেই। যদি এই মানসিকতা অন্তরে লালন করতে পারেন, হঠাৎ করেই তখন নিজের ভেতর উত্তেজনা অনুভব করবেন। হঠাৎ করেই তখন নিজের ভেতর এক ধর

প্রত্যেকেরই যার যার জায়গা থেকে ভূমিকা রাখা

Image
  উম্মাহকে জাগিয়ে তোলার জন্য আমাদের প্রত্যেকেরই যার যার জায়গা থেকে ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে। আমরা যদি বুঝতে পারি যে, ইসলামের মাঝে বিভিন্ন দলের বৈচিত্রময় উপস্থিতি প্রাকৃতিক এবং প্রতিটি গ্রূপ যার প্রতি আহ্বান করছে তা আসলে বৃহত্তর ইসলামিক পরিমন্ডলের ভেতরে থেকেই তারা করছে। এগুলো ইসলামের বাইরের কিছু নয়। এগুলো সবই খাইর। সবই উম্মাহর জন্য কল্যাণকর। আমি নাম উল্লেখ করেই বলছি। কারণ আমি কারো সমালোচনা করছি না। বরং সবার প্রশংসা করছি। যেমন--দেওবন্দী আন্দোলন। মাশাআল্লাহ! হানাফী ফিকহ রক্ষার জন্য তারা কি অসাধারণ কাজই না করছে। উম্মাহর প্রতি তাদের এক নম্বর অবদান হলো তারা কুরআন মুখস্ত করার প্রতি জোর প্রদান করে। তাদের আরো অসংখ্য ভালো কাজ রয়েছে। কিন্তু তাদের এই একটি কাজের জন্য উম্মাহ তাদের নিকট চিরঋণী। যেখানেই তারা যাক মাশাআল্লাহ তাবারাকাল্লাহ সেখানেই হুফ্ফাজ ছড়িয়ে দিচ্ছে। দেওবন্দী আন্দোলনের জন্য আমরা আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞ। তাবলীগি জামায়াত। মাশাআল্লাহ তাবারাকাল্লাহ সুন্দর চরিত্রের মানুষদের জামায়াত। তাদের সাথে মিশলেই বিশুদ্ধতার একটি অনুভূতি আঁচ করতে পারেন। সরলতার একটি অনুভূতি আঁচ করতে পারেন। অধ্যাত্মিকতার এ

মহানবী (সা.)–র রাজনীতির মূল বৈশিষ্ট্য

Image
  মহানবী (সা.)–এর আবির্ভাবের আগে আরবের রাজনৈতিক অবস্থা ছিল নৈরাজ্যে ভরা। গোত্রভিত্তিক সমাজে ভেদাভেদই ছিল প্রধান। কলহ, যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি লেগেই থাকত। কোনো সামাজিক বা রাজনৈতিক কেন্দ্র না থাকায় আরব সমাজ ছিল বিভক্ত। নৈরাজ্যপূর্ণ আরবে মহানবী (সা.) যে অবিস্মরণীয় রাজনৈতিক বিপ্লব সাধন করেছিলেন তা বিশ্বের ইতিহাসে বিস্ময়কর।   মহানবী (সা.)–র রাজনৈতিক দায়িত্ব আল্লাহ–তাআলা ঘোষণা করেছেন, তিনিই এ সত্তা যিনি তাঁর রাসুলকে হেদায়াত ও দীনের হকসহ পাঠিয়েছেন, যাতে আর সব দীনের ওপর একে বিজয়ী করে তোলেন। এ বিষয়ে আল্লাহ সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট। (সুরা আল ফাতহ, আয়াত: ২৮)। একই দায়িত্বের কথা তিনি সুরা তাওবা (আয়াত: ৩৩) এবং সুরা আস-সফ্‌ফেও (আয়াত: ৯) উল্লেখ করেছেন। ইসলাম নামের পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধানকে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্বাস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা ছিল মহানবী (সা.)–এর দায়িত্ব, যেন তা মানবসমাজের সর্বস্তরে বাস্তবায়ন হয়। মহানবী (সা.)–র রাজনীতির লক্ষ্য ওপরের আয়াত থেকে বোঝা যায় মহানবী (সা.)–র রাজনীতি ছিল ইসলামের জন্য। ধর্মীয় চেতনাকে বদ্ধমূল করে আল্লাহ ভীরু চরিত্রবান মানুষ তৈরি করতে চেয়েছেন তিনি, যেন ধর্মীয় বিধান মূল চালিকাশক্তি হিস

বিয়ের পর খাদিজা (রা.) তাঁর সম্পদ কী করেছিলেন

Image
  সাইয়িদা খাদিজা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রথম স্ত্রী। তিনিই ইসলামে প্রথম ঈমান এনেছেন। প্রথম দান-সাদাকা করেছেন। প্রথম অজু করেছেন। প্রথম নামাজ আদায় করেছেন। উম্মতে মুহাম্মাদির মধ্যে পেয়েছেন প্রথম জান্নাতের সুসংবাদ। (বুখারি, হাদিস: ৩,৮২০) খাদিজা (রা.) ছিলেন  রাসুলুল্লাহকে (সা.) প্রথম সমর্থন দেওয়া নারী। আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে লক্ষ্য করে একবার বলেছিলেন, ‘আল্লাহ–তায়ালা আমাকে খাদিজার চেয়ে উত্তম বিকল্প দান করেননি। কারণ মানুষ যখন কুফরি করেছে, খাদিজা তখন আমার প্রতি ঈমান এনেছে। মানুষ যখন আমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, খাদিজা তখন আমাকে সত্য বলে বিশ্বাস করেছে। মানুষ যখন আমাকে সবকিছু থেকে বঞ্চিত করেছে, সে তখন নিজের সম্পদ নিয়ে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। কুরাইশ নারীদের সন্তানরা যখন আমাকে বঞ্চিত করছিল, আল্লাহ তখন আমাকে খাদিজার গর্ভে সন্তান দান করেছেন।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২৪,৮৬৪)  বিয়ের পর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সংসারে এসে নিজেকে পূর্ণভাবে সঁপে দিয়েছিলেন খাদিজা (রা.)। পূর্ণভাবে ব্যবসায় মনোযোগী একজন নারী নিজেকে বানিয়ে নিয়েছিলেন ঘরের কেন্দ্রবিন্দু। ব্যবসার সব দায়িত্ব এবং সব ধনস

ফেরেশতারা কোরআন তিলাওয়াত শুনতে এল

Image
  উসায়দ ইবনে হুজাইর (রা.) নামে নবীজির (সা.) একজন সাহাবি ছিলেন। একদিন তিনি ঘোড়ার আস্তাবলে বসে কোরআন তিলাওয়াত করছিলেন। এ সময় তার ঘোড়া লাফাতে শুরু করল। তিনি আবারও তিলাওয়াত করতে শুরু করলে ঘোড়াটি আবারও লাফাতে শুরু করল। এবারও তিনি থমকে গেলেন। কিছুক্ষণ পর আবার পড়তে শুরু করলে ঘোড়াটি আবারও লাফ দিল। পাশেই উসায়দ ইবনে হুজাইর (রা.)-এর ছেলে ইয়াহইয়া শুয়ে ছিল। উসায়দ ইবনে হুজাইর (রা.) বলেছেন, আমার আশঙ্কা হলো যে ঘোড়াটি আমার ছেলেকে পিষ্ট করে ফেলতে পারে। তাই আমি উঠে তার কাছে গেলাম। হঠাৎ আমি মাথার ওপর শামিয়ানার মতো কিছু একটা দেখতে পেলাম। তার ভেতর প্রদীপের মতো অনেকগুলো জিনিস পুরো শামিয়ানাটাকে আলোকিত করে রেখেছে। আমি দেখামাত্রই সেগুলো ওপরে উঠে মুহূর্তেই শূন্যে মিলিয়ে গেল। আমি আর সেটা দেখতে পেলাম না। পরদিন সকালে নবীজির (সা.) কাছে গিয়ে আমি বললাম, আল্লাহর রাসুল (সা.), গতকাল রাতে আমি আমার ঘোড়ার আস্তাবলে কোরআন পড়ছিলাম। আমার ঘোড়া তখন হঠাৎ লাফাতে শুরু করেছিল। নবীজি (সা.) তাঁর কথা শুনে বললেন, ‘হে ইবনে হুজাইর! তুমি কোরআন পাঠ করতে থাকতে। তিলাওয়াত থামিয়ে দিলে কেন?’ ‘আল্লাহর রাসুল (সা.), আমি আবারও পড়লাম। ঘোড়াটি আবারও লাফ

যেকোনো সময় এই দোয়া করা যায়

Image
  পবিত্র কোরআনে সুরা আলে ইমরানের ১৭৩ নম্বর আয়াতের অংশ ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল।’ অর্থ: আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, আর তিনিই কত ভালো কর্মবিধায়ক। এই আয়াতের প্রেক্ষাপট হলো মুসলিমরা প্রথমবারের মতো জানতে পারে তাদের বদরের যুদ্ধে অংশ নিতে হবে। আবু সুফিয়ানের বাণিজ্যযাত্রা, মক্কার কুরাইশদের এক হাজার সদস্যের বিশাল বাহিনী নিয়ে আগমন সব তথ্য মুসলিমরা পাচ্ছিল। মুসলিমরা বদরের ময়দানে যুদ্ধের জন্য উপস্থিত হলেও তাদের তখনো প্রস্তুতি চলছিল। এ অবস্থায় সাহাবিদের মানসিকতা কেমন ছিল, আল্লাহ সে প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তাদেরকে লোকে বলেছিল যে তোমাদের বিরুদ্ধে লোক জমায়েত হয়েছে। সুতরাং তোমরা তাদের ভয় করো । তখন এ তাদের বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করেছিল আর তারা বলেছিল ‘আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, আর তিনিই কত ভালো কর্মবিধায়ক।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৭৩) এটি পড়ার কথা সহিহ হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণিত। রাসুল (সা.) মুশরিকদের হামলা হবে, এমন খবর শুনে হামরাউল আসাদ নামক জায়গায় দোয়াটি পাঠ করেন। (বুখারি, হাদিস: ৪৫৬৩) ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল, নিমাল মাওলা ওয়া নিমান নাসির।’ এই দোয়া জিকির যেকোনো সময় করা যায়। অসুস্থ বা উদ্

হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল কখন পড়বেন

Image
  ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল, নিমাল মাওলা ওয়া নিমান নাসির।’ এই দোয়া জিকির যেকোনো সময় করা যায়। অসুস্থ বা উদ্বিগ্ন অবস্থায়, কোনো ক্ষতির আশঙ্কায় অথবা শত্রুর হাত থেকে মুক্তির জন্য এ দোয়া বিশেষ কার্যকর। আল্লাহই যথেষ্ট এবং উত্তম সাহায্যকারী। অন্য দোয়ার মতো আল্লাহর কাছে কোনো আবেদন করা হয় না। দোয়াটি এত গুরুত্বপূর্ণ যে হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোতে এই দোয়া পড়তেন। হজরত ইব্রাহিম (আ.)–কে যখন অবিশ্বাসী অত্যাচারী শাসক নমরুদ আগুনে নিক্ষেপ করে, তখন তিনি পড়েন ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল’। যার ফলে আল্লাহ হজরত ইব্রাহিম (আ.)–কে আগুন থেকে রক্ষা করেছিলেন। হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি'মাল ওয়াকিল বাংলা অর্থ পবিত্র কোরআনে সুরা আলে ইমরানের ১৭৩ নম্বর আয়াতের অংশ ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল, নিমাল মাওলা ওয়া নিমান নাসির।’ হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি'মাল ওয়াকিল বাংলা অর্থ: আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, আর তিনিই কত ভালো কর্মবিধায়ক। এই আয়াতের প্রেক্ষাপট হলো মুসলিমরা প্রথমবারের মতো জানতে পারে তাদের বদরের যুদ্ধে অংশ নিতে হবে। আবু সুফিয়ানের বাণিজ্যযাত্রা, মক্কার কুরাইশদের এক

ইয়া জালালি ওয়াল ইকরাম কেন পড়া দরকার

Image
  আল্লাহর ৯৯টি নামের মধ্যে একটি নাম হলো ‘ইয়া জালালি ওয়াল ইকরাম’। এটি ইসমে আজম বা বড় নাম। জালাল শব্দের অর্থ মর্যাদাবান এবং ইকরাম অর্থ সম্মানিত। আল্লাহ বড় বা শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করতে যেসব নামে ডাকা হয়, সেগুলোকে বলে ইসমে আজম। আল্লাহর এই নামটি কোরআনে এসেছে দুবার। সুরা আর রহমানের ২৭ নম্বর ও ৭৮ নম্বর আয়াতে। ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরামের অর্থ সমস্ত সৃষ্টি জগতের মালিক, যিনি সৃষ্টিকুল হতে ভয় পাওয়ার হকদার ও একমাত্র প্রশংসার যোগ্য, মহৎ, বড়, দয়া ও ইহসানের অধিকারী। এর ফজিলত জাল জালালি ওয়াল ইকরাম মহান আল্লাহর গুণবাচক নামগুলোর একটি। আল্লাহকে ডাকার সময় এই নামের আগে যখন ইয়া যুক্ত করে বলতে হবে ‘জাল জালালি ওয়াল ইকরাম’। নবীজি (সা.) এক হাদিসে বলেছেন, ‘তোমরা সব সময় ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম পড়াকে অপরিহার্য করে নাও (তিরমিজি, হাদিস: ৩,৫২৫)। অর্থাৎ সব সময় এই নাম পড়ার প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নবীজি (সা.) নামাজ আদায়ের পরে বসা অবস্থায় বলতেন, ‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম তাবারাকতা ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম।’ অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, আপনি সালাম (শান্তি নিরাপত্তা প্রদানকারী, আপনার পক্ষ

এক লোভী মালিকের পরিণতি

Image
  একটি বাগানের একজন মালিক ছিলেন। লোকটি ছিলেন খুবই আল্লাহভীরু। তিনি বাগানের ফসলের নির্দিষ্ট একটি অংশ গরিব-মিসকিনদের দান করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর তিন ছেলে সেই বাগানের মালিক হলো। তিন ছেলের মধ্যে দুজন ভাবল, তাদের পরিবারের লোকসংখ্যার তুলনায় বাগানের ফসল খুবই কম। ফসলের নির্দিষ্ট অংশ আর গরিব-মিসকিনকে দান করা সম্ভব নয়। ছেলের মধ্যে একজন অবশ্য গরিব-মিসকিনকে দান করতে চাইল। কিন্তু বাকি দুই ছেলে তার কথায় কান দিল না। পরদিন সকালে ভিক্ষুক আসার আগেই তারা ফসল কেটে নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করল। প্রতিজ্ঞা করার সময় তারা ইনশা–আল্লাহ (আল্লাহ চাইলে) বলল না। ইনশা–আল্লাহ না বলায় এবং গরিব-মিসকিনকে কিছু না দেওয়ার অপরাধে আল্লাহ তাদের বাগানের ওপর গজব নাজিল করলেন। তিন ভাই ঘুমিয়ে থাকার অবস্থায় প্রচণ্ড ঝড় বয়ে গেল। এতে বাগানের ফসলের বিরাট ক্ষতি হলো। সকালে তারা ফসল কাটতে যাওয়ার সময় চুপি চুপি বলল, ‘সাবধান, আজ যেন কোনো ভিক্ষুকের দল ভিড় জমাতে না পারে।’ তারা আসার আগেই ফসল তোলার কাজ শেষ করতে হবে। ভিক্ষুক ও গরিবদের তাড়িয়ে দেওয়ার মনোভাব নিয়ে তারা বাগানে পৌঁছাল।বাগানে গিয়ে তারা দেখল লণ্ডভণ্ড পরিস্থিতি। সেটা দেখে তারা বলল, ‘মনে হয় আমর

ক্ষমতাধর তিন জালিম শাসকের পরিণতি

Image
  ক্ষমতাধর তিন জালিম শাসকের পরিণতি পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকেই আল্লাহ তাআলা মানুষের প্রতি কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করেছেন, যা সর্বযুগে সমানভাবে প্রযোজ্য, যার পরিবর্তন কখনো ঘটেনি। তেমনি মহান সত্তা আল্লাহ তাআলা নিজেও তার ওপর কিছু বিষয় নিষিদ্ধ ও হারাম করেছেন, যার অন্যতম একটি—কারো প্রতি জুলুম বা অত্যাচার না করা। এক হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে আমার বান্দারা! আমি আমার নিজ সত্তার ওপর অত্যাচারকে হারাম করে নিয়েছি এবং তোমাদের মধ্যেও তা হারাম বলে ঘোষণা করছি। অতএব, তোমরা একে অপরের ওপর অত্যাচার কোরো না। (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৬৬) এর পরও যারা আল্লাহর বিধান লঙ্ঘন করে অন্যের প্রতি জুলুম করেছে, আল্লাহর শাস্তি তাদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়নি। ইতিহাসের পাতায় তাদের সেই জুলুম এবং ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণের শাস্তির কথা পরবর্তীদের জন্য সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। এখানে ক্ষমতাধর তিন অত্যাচারী শাসকের ভয়াবহ শাস্তির কথা তুলে ধরা হলো— ::নমরুদের জুলুম ও তার ভয়াবহ শাস্তি:: পৃথিবীর ইতিহাসে আল্লাহর সঙ্গে প্রথম ধৃষ্টতা প্রদর্শনকারী ও নিজ সম্প্রদায়ের প্রতি চরম অত্যাচারী হিসেবে পরিচিত ছিল নমরুদ। আল্লাহকে নিঃশেষ করার জন্য আসমান অভ

জীবন দেওয়া হয়েছে পরীক্ষা করার জন্য

Image
  আপনার জীবনের সকল সমস্যা এবং সমস্যাগুলোর সাথে সম্পর্ক আসলে আপনার জন্য উত্তম। কারণ, এ সমস্যাগুলো আসে আপনার স্বতন্ত্র ব্যক্তিসত্তার উন্নতিকল্পে। যদি নম্রতা দেখানোর পরিবেশ না পান, কিভাবে আপনি একজন বিনম্র মানুষ হবেন? যদি ধৈর্যের পরীক্ষা না দেন, কিভাবে আপনার ধৈর্য্যের কথা জানা যাবে? যদি এমন পরিস্থিতিতে না পড়েন যেখানে আপনাকে সহনশীলতা প্রদর্শন করতে হয়, তবে কিভাবে আপনার সহনশীলতার কথা জানা যাবে? আচ্ছা বুঝলাম। কিন্তু এই গুণগুলো আমাকে কেন অর্জন করতে হবে? কারণ, কিয়ামতের দিন আপনি একা একা আল্লাহর সামনে দন্ডায়মান হবেন। তখন কিছু যোগ্যতা নিয়ে আপনাকে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে। এই পৃথিবীতে থাকাবস্থায় আপনাকে সেগুলো অর্জন করতে হবে। কি কি যোগ্যতা অর্জন করতে হবে তা আল কুরআন আপনাকে শেখাবে। আপনাকে ধৈর্যশীল হতে হবে, সৎ হতে হবে, আপনার নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে, আপনাকে দয়ালু হতে হবে, মানুষকে সাহায্য করতে হবে, আপনাকে আপনার রবের ইবাদাত করতে হবে, তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে, বিনয়ী হতে হবে.... এই পৃথিবীতে অবস্থানকালীন সময়ে আপনাকে এই যোগ্যতাগুলো অর্জন করতে হবে। আপনার হয়তো এই যোগ্যতাগুলো এখন নেই, কিন্