পোস্টগুলি

জানুয়ারী, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

অর্থ বুঝে নামাজ পড়ার ফজিলত

ছবি
  সুরা ফাতিহায় আমরা যখন বলি, ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন (সকল প্রশংসা বিশ্বজগতের মালিক আল্লাহর জন্যই)।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হামিদা নি, আবদি (আমার বান্দা আমার প্রশংসা করল)।’ অতঃপর আমরা যখন বলি—‘আর রাহমানির রাহিম (তিনি পরম করুণাময় অতি দয়ালু)’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আছনা আলাইয়া আবদি (আমার বান্দা আমার বিশেষ প্রশংসা করল)।’ এরপর যখন আমরা বলি, ‘মালিকি ইয়াওমিদ্দিন (তিনি বিচারদিনের মালিক)।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মাজ্জাদানি আবদি (আমার বান্দা আমাকে সম্মানিত করল)।’ এরপর আমরা যখন বলি, ‘ইয়্যাকা নাবুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তায়িন (শুধু আপনারই ইবাদত করি আর শুধু আপনার কাছেই সাহায্য চাই)।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হাজা বাইনি ওয়া বাইনা আবদি (এই ফয়সালাই হলো আমার ও আমার বান্দার মধ্যে—বান্দা আমার ইবাদত ও আনুগত্য করবে, আমি তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করব)।’ আমরা যখন বলি, ‘ইহদিনাছ ছিরাতল মুস্তাকিম, ছিরাতল্লাজিনা আনআমতা আলাইহিম, গয়রিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দল্লিন! (আমাদের সঠিক পথ দেখান, তাদের পথ যাদের আপনি নিয়ামত দিয়েছেন; তাদের পথ নয় যারা পথভ্রষ্ট; আর না যারা অভিশপ্ত)।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘লিআবদি মা ছা...

জীবনে আপনি সম্পূর্ণরূপে পরিতুষ্ট হতে পারবেন না।

ছবি
  এই জীবনে আপনি সম্পূর্ণরূপে পরিতুষ্ট হতে পারবেন না। আর জান্নাতে কি হবে? আল্লাহ তায়ালা বলেন—فَهُوَ فِیۡ عِیۡشَۃٍ رَّاضِیَۃٍ فِیۡ جَنَّۃٍ عَالِیَۃٍ সে জান্নাতের জীবনে পরিতৃপ্ত হবে। সুউচ্চ উদ্যানে অবস্থান করবে..." কুরআনের অন্যত্রও আল্লাহ উদ্যানের কথা বলেছেন, কিন্তু এখানে তিনি শুধু উদ্যানের কথা বলছেন না, তিনি এটাকে বলছেন—সুউচ্চ উদ্যান। বিষয়টা কৌতূহল জাগ্রতকারী, কারণ عَالِيَةٍ - ‘আলীয়াহ' শব্দটি আক্ষরিক এবং রূপক উভয় অর্থেই ব্যবহৃত হতে পারে। এর অর্থ কী? এটি এমন একটি বাগান যা শুধু সুউচ্চই নয়, এর ফলে আপনি চমৎকার একটি ভিউও (view) পাবেন—এটি হলো এর একটি অর্থ। আমরা জানি, যখন দর্শনীয় কোনো স্থানে যান, যেমন পাহাড়ের চূড়ায় বা হাইকিং-এ, অথবা গাড়ি চালিয়ে দূরে কোথাও যান যেখানে চমৎকার ভিউ রয়েছে; দৃশ্যটা দেখা মাত্র নিজের ভেতরে চমৎকার একটা প্রশান্তি অনুভব করেন। সেখানে দাঁড়িয়ে পরিবেশটা উপভোগ করতেই ভালো লাগে; শুধু এক মুহূর্তের জন্য অনুভব করতেই মনের মাঝে কেমন জানি প্রশান্তির একটি পরশ বয়ে যায়। এমনকি যখন গাড়ি চালিয়ে দূরে ভ্রমণ করেন, কোথাও কোথাও দর্শনীয় স্থান থাকে যেখানে আপনি কিছুক্ষণের জন্য রাস্...

সুউচ্চ উদ্যান

ছবি
  এই জীবনে আপনি সম্পূর্ণরূপে পরিতুষ্ট হতে পারবেন না। আর জান্নাতে কি হবে? আল্লাহ তায়ালা বলেন—فَهُوَ فِیۡ عِیۡشَۃٍ رَّاضِیَۃٍ فِیۡ جَنَّۃٍ عَالِیَۃٍ সে জান্নাতের জীবনে পরিতৃপ্ত হবে। সুউচ্চ উদ্যানে অবস্থান করবে..." কুরআনের অন্যত্রও আল্লাহ উদ্যানের কথা বলেছেন, কিন্তু এখানে তিনি শুধু উদ্যানের কথা বলছেন না, তিনি এটাকে বলছেন—সুউচ্চ উদ্যান। বিষয়টা কৌতূহল জাগ্রতকারী, কারণ عَالِيَةٍ - ‘আলীয়াহ' শব্দটি আক্ষরিক এবং রূপক উভয় অর্থেই ব্যবহৃত হতে পারে। এর অর্থ কী? এটি এমন একটি বাগান যা শুধু সুউচ্চই নয়, এর ফলে আপনি চমৎকার একটি ভিউও (view) পাবেন—এটি হলো এর একটি অর্থ। আমরা জানি, যখন দর্শনীয় কোনো স্থানে যান, যেমন পাহাড়ের চূড়ায় বা হাইকিং-এ, অথবা গাড়ি চালিয়ে দূরে কোথাও যান যেখানে চমৎকার ভিউ রয়েছে; দৃশ্যটা দেখা মাত্র নিজের ভেতরে চমৎকার একটা প্রশান্তি অনুভব করেন। সেখানে দাঁড়িয়ে পরিবেশটা উপভোগ করতেই ভালো লাগে; শুধু এক মুহূর্তের জন্য অনুভব করতেই মনের মাঝে কেমন জানি প্রশান্তির একটি পরশ বয়ে যায়। এমনকি যখন গাড়ি চালিয়ে দূরে ভ্রমণ করেন, কোথাও কোথাও দর্শনীয় স্থান থাকে যেখানে আপনি কিছুক্ষণের জন্য রাস্...

কুরআন আপনার কাছ থেকে কী চায়?

ছবি
  কুরআন আপনার কাছ থেকে কী চায়? কুরআন থেকে আমি হেদায়েত খুঁজছি—এর মানে কী? হেদায়েত খোঁজা মানে শুধু আমল বা কাজ খোঁজা নয়। এটি অতি সরল একটি অভিমত, যা খুবই জনপ্রিয়। চলুন, অনুসন্ধান করে দেখি, কুরআন থেকে হেদায়েত খোঁজার অর্থ কী? সবার আগে, এটি আপনার চিন্তাভাবনাকে সংশোধন করে। ফলে, চারপাশের দুনিয়াকে আপনি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা শুরু করেন। কুরআনে হেদায়েতের অন্যতম বড় একটি রাস্তা হলো—কুরআন বাস্তবতাকে আপনার উপলব্ধির চেয়ে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে। কুরআন অধ্যয়নের পূর্বে বাস্তবতাকে আপনি একভাবে দেখতেন; কুরআন অধ্যয়নের পরে এটি এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি জিনিস। মূল্যবান কিছু দেখলে আপনি জিনিসটি সম্পর্কে একভাবে চিন্তা করেন। আর মূল্যহীন কিছু দেখলে তার সম্পর্কে ভিন্নভাবে চিন্তা করেন। তো, কুরআন চারপাশের বাস্তবতা সম্পর্কে আপনার চিন্তা এবং উপলব্ধিতে পরিবর্তন নিয়ে আসে। সহজ একটি উদাহরণ দিচ্ছি। কুরআন মাটি ভেদ করে চারাগাছ উঠে আসা সম্পর্কে কথা বলেছে। কুরআন যদি এ সম্পর্কে না বলতো, তবু আপনি জানেন, চারাগাছ মাটি ভেদ করে উঠে আসে। তাহলে কুরআন বলাতে এতে কী পার্থক্য তৈরি হয়? কুরআন বলছে, "যখনি তুমি বিচার দিবসের কথা ভ...

যখন আপনি মৃত্যুর ফেরেশতার সাক্ষাৎ লাভ করবেন..

ছবি
  প্রশ্ন হলো যখন আপনি মৃত্যুর ফেরেশতার সাক্ষাৎ লাভ করবেন... যদি এই মুহূর্তে মৃত্যুর ফেরেশতার সাক্ষাৎ লাভ করেন, আপনি কী করতে পারেননি বলে সবচেয়ে বেশি আফসুস করবেন? এবং ঐটার কি আসলে ততটুকু মূল্য ছিল? আপনি এখন যা করছেন, যেভাবে আপনার জীবন অতিবাহিত করছেন, যা কিছু অতীতে করেছেন আর যা করতে ব্যর্থ হয়েছেন সেগুলোর কি আসলে ততোটুকু মূল্য ছিল? যত বেশি মূল্য আপনি তাতে দিয়েছেন? আল্লাহর সামনে আপনি কেমন রেজিউমি নিয়ে দাঁড়াবেন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের বলেছেন—মানুষ যখন কোন মৃত ব্যক্তির কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সে লোক সম্পর্কে ভালো ভালো কথা বলে, তখন ফেরেশতারা তাকে ধাক্কা দিয়ে জিজ্ঞেস করে - "আহাকাজা কুন্তা" তুমি কি ঐরকম ছিলে? তারা যেভাবে তোমাকে বর্ণনা করছে? "আহাকাজা কুন্তা" তুমি কি সেরকম ছিলে? তারা যেমন তোমাকে বর্ণনা করছে? সুবহানাল্লাহ! একটু চিন্তা করে দেখুন। আপনি তো নিজেকে ভালো করেই চেনেন। আপনি কী নিয়ে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হচ্ছেন, আপনার মনের সত্যিকারের অবস্থা কী তাতো আপনি ভালো করেই জানেন। আপনার কাজগুলোর সত্যিকারের ব্যাখ্যা আর কেউ না জানলেও আপনি তো ভালো করেই জানেন। তা কি...

ধৈর্যের সংজ্ঞা

ছবি
  ধৈর্যের সংজ্ঞা — ড. ইয়াসির ক্বাদী এখন প্রশ্ন হলো ধৈর্য বলতে আসলে কী বোঝায়? আর কিভাবে এটা প্রদর্শন করা হয়? আমার প্রিয় ভাই এবং বোনেরা, বুঝতে চেষ্টা করুন, ধৈর্য এতো কঠিন হওয়ার কারণ হলো— বাস্তবে ধৈর্য মানে কোনো কিছু না করা, নিষ্ক্রিয়তা। ধৈর্য মানে কিছু না করা। কাজটি করার ইচ্ছেটাকে দমন করা। কোনো কিছু করা বরং সহজ। যখন কোনো কিছুতে বিরক্ত হয়ে পড়েন, যখন রেগে যান, কষ্ট পান যখন, শোকাহত হয়ে পড়েন যখন, তখন মনে হয় কিছু একটা করা দরকার। ধৈর্য মানে সে সময় নিজেকে দমন করা, আটকিয়ে দেওয়া এমন কিছু করা থেকে যা আল্লাহ পছন্দ করেন না। ধৈর্য মানে— কোনো কারণে ভেতরে ভেতরে আপনার খুব কষ্ট হচ্ছে কিন্তু আপনি তা বাহিরে প্রকাশ হতে দিচ্ছেন না। শোক, রাগ, ক্ষোভ, হতাশা, যেটাই হউক না কেন আপনি তা গিলে ফেলেছেন, বাহিরে প্রকাশ হতে দিচ্ছেন না। ঠিক এই কারণে ধৈর্য ধরা এতো কঠিন। কারণ, সক্রিয়তার নাম ধৈর্য নয়; ধৈর্য হলো নিষ্ক্রিয়তার নাম। (patience is not an action, patience is inaction) কেউ একজন মারা গেলো, আপনার প্রিয় কারো মৃত্যু হলো। আপনি তখন জিহ্বা নিয়ন্ত্রণ করেন। অনৈসলামিক পন্থায় আপনি বিলাপ করেন না। আপনি জিহ্বাকে নিয়...

জান্নাতে আল্লাহর সাথে আপনার প্রথম কথোপকথনটি কেমন হবে ?

ছবি
  জান্নাতে আল্লাহর সাথে আপনার প্রথম কথোপকথনটি কেমন হবে তা নিয়ে কখনো ভেবে দেখেছেন ধরুন, আল্লাহর রহমতে আপনি জান্নাতে প্রবেশ করেছেন। প্রথমবারের মতো আল্লাহর সাথে আপনার সাক্ষাৎ। গেইট দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করলেন। জান্নাতি পোশাক পরিচ্ছদ পরিধান করলেন। প্রাসাদগুলো দেখতে পাচ্ছেন। নদীগুলো দেখতে পাচ্ছেন। নিজের পরিবার পরিজনকে দেখতে পাচ্ছেন। এখন, আল্লাহ আপনার সাথে কথা বলতে চান। আর এটা প্রশ্নত্তোর নয়। কারণ, প্রশ্নোত্তরের সেশন ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ হবে আমাদের। সে সময় আমাদের বিশেষভাবে সজ্জিত করা হবে। আল্লাহ যার বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে--عٰلِیَهُمۡ ثِیَابُ سُنۡدُسٍ خُضۡرٌ وَّ اِسۡتَبۡرَقٌ ۫ وَّ حُلُّوۡۤا اَسَاوِرَ مِنۡ فِضَّۃٍ - তাদের উপর থাকবে সবুজ ও মিহি রেশমের পোশাক এবং মোটা রেশমের পোশাক, তারা অলংকৃত হবে রৌপ্য নির্মিত কংকনে।" (৭৬:২১) তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের সিল্কের তৈরি পোশাক পরানো হবে, হাতে বিশেষ ধরণের ব্রেসলেট পরানো হবে। মনে করতে পারেন রোলেক্স ঘড়ির মত কিছু। বিশেষ ব্রান্ডের ঘড়ি পরানো হবে। হাতে ব্রেসলেট পরানো হবে। সুন্দর জামা পরানো হবে। কেন তাদের স্পেশাল পোশাক পরানো হবে? কারণ...

ধৈর্যের সংজ্ঞা

ছবি
  ধৈর্যের সংজ্ঞা — ড. ইয়াসির ক্বাদী এখন প্রশ্ন হলো ধৈর্য বলতে আসলে কী বোঝায়? আর কিভাবে এটা প্রদর্শন করা হয়? আমার প্রিয় ভাই এবং বোনেরা, বুঝতে চেষ্টা করুন, ধৈর্য এতো কঠিন হওয়ার কারণ হলো— বাস্তবে ধৈর্য মানে কোনো কিছু না করা, নিষ্ক্রিয়তা। ধৈর্য মানে কিছু না করা। কাজটি করার ইচ্ছেটাকে দমন করা। কোনো কিছু করা বরং সহজ। যখন কোনো কিছুতে বিরক্ত হয়ে পড়েন, যখন রেগে যান, কষ্ট পান যখন, শোকাহত হয়ে পড়েন যখন, তখন মনে হয় কিছু একটা করা দরকার। ধৈর্য মানে সে সময় নিজেকে দমন করা, আটকিয়ে দেওয়া এমন কিছু করা থেকে যা আল্লাহ পছন্দ করেন না। ধৈর্য মানে— কোনো কারণে ভেতরে ভেতরে আপনার খুব কষ্ট হচ্ছে কিন্তু আপনি তা বাহিরে প্রকাশ হতে দিচ্ছেন না। শোক, রাগ, ক্ষোভ, হতাশা, যেটাই হউক না কেন আপনি তা গিলে ফেলেছেন, বাহিরে প্রকাশ হতে দিচ্ছেন না। ঠিক এই কারণে ধৈর্য ধরা এতো কঠিন। কারণ, সক্রিয়তার নাম ধৈর্য নয়; ধৈর্য হলো নিষ্ক্রিয়তার নাম। (patience is not an action, patience is inaction) কেউ একজন মারা গেলো, আপনার প্রিয় কারো মৃত্যু হলো। আপনি তখন জিহ্বা নিয়ন্ত্রণ করেন। অনৈসলামিক পন্থায় আপনি বিলাপ করেন না। আপনি জিহ্বাকে নিয়...

ইয়াজুজ–মাজুজের কাহিনি

ছবি
  মদিনার ইহুদিরা মক্কার কুরাইশদের নবীজি (সা.)-এর কাছে কিছু প্রশ্ন করার পরামর্শ দিয়েছিল। প্রশ্নগুলো ছিল আসহাবে কাহাফের পরিচয় ও ঘটনা, রুহের প্রকৃতি ও জুলকারনাইনের ঘটনা। সুরা কাহাফে এ ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। ইয়াজুজ-মাজুজ অর্থ দ্রুতগামী। ইয়াজুজ-মাজুজ পৃথিবীতে বের হয়ে অতি দ্রুত সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে। কারও কারও মতে, আরবি ‘মওজ’ শব্দ থেকে ‘ইয়াজুজ-মাজুজ’ শব্দের উৎপত্তি। এর অর্থ ‘তরঙ্গ’ বা ‘ঢেউ’। তাদের মতে, ইয়াজুজ-মাজুজ পৃথিবীতে বের হবে অজস্র সংখ্যায়, এরপর ঢেউয়ের মতো ছুটতে ছুটতে সারা পৃথিবীতে বিস্তার লাভ করবে। এ জন্যই তাদের এই নামকরণ। ইয়াজুজ-মাজুজ সম্প্রদায় আদম (আ.)-এর বংশধর। শাসক জুলকারনাইন ইয়াজুজ-মাজুজদের প্রাচীর দিয়ে আটকে রেখেছেন (সুরা কাহাফ, আয়াত ৯২-৯৭)। কিয়ামতের আগে হজরত ঈসা (আ.)-এর পৃথিবীতে পুনরাগমনের সময় তারা ওই প্রাচীর ভেঙে বেরিয়ে আসবে এবং সামনে যা পাবে, সব ভক্ষণ করবে। কোরআনে আছে, ‘সে (জুলকারনাইন) বলল, আমার প্রতিপালক আমাকে যে ক্ষমতা দিয়েছেন, তা-ই যথেষ্ট। সুতরাং তোমরা আমাকে শ্রম দিয়ে সাহায্য করো, আমি তোমাদের ও তাদের মাঝখানে এক মজবুত প্রাচীর গড়ে দেব। তোমরা আমার কাছে ...

আল্লাহর একটি নাম হলো আল-জামিল

ছবি
  আল্লাহর একটি নাম হলো আল-জামিল। আল-জামিলের অর্থ, যিনি সুন্দর। যিনি সবচেয়ে সুন্দর। নামটি যখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার প্রতি আরোপ করা হয় তখন এটি চারটি অর্থ প্রকাশ করে। প্রথম অর্থঃ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা নিজেই সৌন্দর্য এবং পারফেকশনের সর্বোচ্চ চূড়া। কোনো কিছুই আল্লাহর চেয়ে বেশি সুন্দর নয়। ঈমানদারদের জন্য জান্নাতের চেয়েও বড় একটি পুরস্কার রয়েছে। যে পুরস্কারের কাছে জান্নাত ম্লান হয়ে পড়বে। আর তা হলো— আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে দেখার পুরস্কার। কুরআনে এসেছে- وُجُوۡهٌ یَّوۡمَئِذٍ نَّاضِرَۃٌ - اِلٰی رَبِّهَا نَاظِرَۃٌ - "কতক মুখ সেদিন উজ্জ্বল হবে। তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে।" (৭৫:২২-২৩) এ জন্য রাসূলুল্লাহ (স) এর একটি দোয়া ছিল- اللهم اني اسالك لذة النظر الى وجهك الكريم - আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা লাজ্জাতান নাজারি ইলা ওয়াজহিকাল কারিম। অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আপনার অভিজাত এবং সুন্দর মুখের দিকে তাকানোর স্বাদ পেতে চাই। দ্বিতীয় অর্থঃ আল্লাহর সকল নাম এবং গুণাবলী সুন্দরতম। তৃতীয় অর্থঃ আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির সাথে সুন্দরতম উপায়ে আচরণ করেন। আল্লাহ আমাদের সাথে উত...

কাউকে বোন ডাকলে তার সঙ্গে দেখা দেওয়া যাবে?

ছবি
  প্রশ্ন:  একটি মেয়ের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব রয়েছে, তার সঙ্গে আমার সম্পর্কটা নিজ ভাই বোনের মত, আমাদের মধ্যে কোন খারাপ কথাবার্তাও হয় না, একদম নিজ ভাই বোনের মত আমাদের সম্পর্ক। আমাদের এই সম্পর্কে শরিয়তে অনুযায়ী কী বলে, আমাদের কি কথা বললে গোনাহ হবে? আমরা দুজন নিজের আপন ভাই বোনের মত। দয়া করে জানাবেন। উত্তর:  মুমিন-পুরুষ হোক কিংবা নারী- তারা একে অপরের সঙ্গে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ। আল্লাহ তাআলা বলেন, মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। (সূরা হুজুরাত ১০) এই আয়াত থেকে বুঝা যায়, মুমিন পুরুষ মুমিন নারীকে ‘বোন’ কিংবা মুমিন নারী মুমিন পুরুষকে ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করতে পারবে। তবে এই সম্বোধন দ্বারা আপন বোনের মত কিংবা আপন ভাইয়ের মত মাহরাম মনে করা যাবে না এবং এর কারণে তার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ, অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা ইত্যাদি জায়েয হয়ে যাবে না।  কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সঙ্গেকোমল ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে। (সূরা আহযাব ৩২) মাহরাম আরবি শব্দ। এটি আরবি হারাম শব্দ থেকে এসেছে। ইসলা...

ঋণ থেকে মুক্তির জন্য যে আমল

ছবি
  আর্থিক দুরবস্থায় পড়লে মানুষ ঋণ নিতে বাধ্য হয়। ঋণের টাকায় প্রয়োজন পূরণের চেষ্টা করে। তবে সাধ্যের বাইরে ঋণ দেওয়া-নেওয়া দুটিই ইসলাম নিষেধ করেছে। কারণ, তাতে সময়মতো ঋণ পরিশোধের সম্ভাবনা কমে যায়। এর ফলে ঋণদাতাকে যেমন হতাশাগ্রস্ত হয়, ঋণগ্রহীতার আত্মমর্যাদাও ক্ষতির শিকার হয়। মহানবী (সা.) আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন যাতে তিনি ঋণে জড়িয়ে না পড়েন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) নামাজের পরে দোয়া করতেন—হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে গুনাহ ও ঋণ থেকে পানাহ চাচ্ছি। এক প্রশ্নকারী জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি ঋণ থেকে বেশি পানাহ চান কেন? রাসুল (সা.) জবাব দিলেন, মানুষ ঋণগ্রস্ত হলে মিথ্যা বলে এবং ওয়াদা ভঙ্গ করে। (বুখারি, হাদিস: ২,৩৯৭) হাদিসে ঋণ থেকে মুক্তির আরও কয়েকটি দোয়া রয়েছে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজানি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল-আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল-বুখলি ওয়াল-জুবনি, ওয়া আউজুবিকা মিন দ্বালায়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’ অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে,...

লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন

ছবি
  হজরত ইউনুস (আ.) ছিলেন একজন নবী। সুরা ইউনুস নামে পবিত্র কোরআনে স্বতন্ত্র একটি সুরা আছে। এই সুরায় তওহিদের প্রমাণ ও অংশীবাদের প্রতিবাদ রয়েছে। সুরাটিতে অবিশ্বাসীদের সম্বোধন করে তওহিদ, ওহি, নবুয়ত ও পরকালের সত্যতা ঘোষণা করা হয়েছে। সুরা ইউনুস ছাড়াও কোরআনে আরও ছয়টি সুরায় হজরত ইউনুস (আ.) সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। দুজন নবী মায়ের নামে পরিচিত হয়েছেন। একজন হজরত ঈসা ইবনে মরিয়ম (আ.), অন্যজন হজরত ইউনুস ইবনে মাত্তা (আ.)। মাত্তা হজরত ইউনুস (আ.)-এর মায়ের নাম। মায়ের নামেই তাঁকে ইউনুস ইবনে মাত্তা বলা হয়। কোরআনে তাঁকে তিনটি নামে উল্লেখ করা হয়েছে—ইউনুস, জুননুন ও সাহিবুল হুত। জুননুন ও সাহিবুল হুতের অর্থ মাছওয়ালা। মাছ–সংশ্লিষ্ট ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে তাঁকে এ নামে ডাকা হয়েছে। হজরত ইউনুস (আ.)-কে বর্তমান ইরাকের মসুল নগরীর কাছাকাছি নিনাওয়া জনপদে নবী হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। সুরা সাফফাতের ১৪৭ আয়াতে এ নিয়ে আলোচনা আছে। তিনি মসুলবাসীকে আল্লাহর পথে ডাকলেন। আখিরাতের বিষয়ে সতর্ক করলেন। কিন্তু তাঁর সম্প্রদায়ের লোকেরা তাঁর কথা শোনেনি। নবী ইউনুস (আ.) তাদের ইমান নিয়ে হতাশ হয়ে পড়লেন। তিন দিনের মধ্যে আল্লাহর আজাব তাদের ওপ...

'আল ফাত্তাহ।'

ছবি
  আল্লাহর একটি নাম হলো 'আল ফাত্তাহ।' এর অর্থ সর্বোত্তম ফয়সালাকারী। যদি কোন সংকটে আটকে যান, কোন উপায় দেখতে পারছেন না তখন এই নাম পড়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চান। বলুন, ইয়া ফাত্তাহ! আমি একটি সংকটে আটকে গেছি, আমার জন্য একটি উত্তম উপায় বের করে দিন। আল্লাহর নাম 'আল-ফাত্তাহ'-এর উপর বিশ্বাস করে আল্লাহর উপর আমরা আমাদের ইয়াকিন এবং তাওয়াক্কুল সীমাহীন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারি। কারো পক্ষে যখন সাহায্য করা সম্ভব নয় তখন একমাত্র আল্লাহই সাহায্য করতে পারেন। যখন কারো পক্ষে দান করা সম্ভব নয় তখন একমাত্র আল্লাহই দিতে পারেন। আল্লাহর কাছেই আছে অদৃশ্য জগতের চাবিসমূহ, যা আর কারো কাছে নেই। আল্লাহর জন্য অসম্ভব বলতে কিছু নেই। 'আল-ফাত্তাহ' অর্থাৎ যিনি শ্রেষ্ঠ ফয়সালাকারী, আমাদের জন্য একটা উপায় বের করে দিতে পারেন। তাহলে আল্লাহর নাম 'আল-ফাত্তাহ' আমরা প্রতিটি সমস্যাজনক পরিস্থিতিতে ব্যবহার করতে পারি এবং সকল উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে। আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারেন। এবং তিনি প্রতিটি কঠিনকে সহজ করে দিতে পারেন। সেজন্য রাসূলুল্লাহ (স) এর একটি দুআ ছিল: اللَّهُمَّ لا سَهْ...