পোস্টগুলি

ডিসেম্বর, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

হাজেরা এবং ইসমাইল (আ) এর বিখ্যাত ঘটনা

ছবি
  সূরা বাকারার ১৫৫-১৫৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন: ১৫৫। আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা, ধন, প্রাণ এবং ফল-ফসলের স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। ১৫৬। নিশ্চয়ই যারা বিপদকালে বলে থাকে, ‘আমরা আল্লাহর জন্য আর আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী’। ১৫৭। এদের প্রতি রয়েছে তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে অনুগ্রহ ও করুণা আর এরাই হিদায়াতপ্রাপ্ত। ঠিক এই অংশটির পরেই আল্লাহ বলেন- "নিশ্চয়ই ‘সাফা’ এবং ‘মারওয়া’ আল্লাহর নিদর্শনগুলোর অন্যতম। কাজেই যে ব্যক্তি কাবাগৃহের হাজ্জ অথবা ‘উমরাহ করবে, এ দু’টোর সায়ী করাতে তাদের কোনই গুনাহ নেই এবং যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোন সৎ কাজ করবে তাহলে নিশ্চয় আল্লাহ (তার ব্যাপারে) গুণগ্রাহী এবং সর্বজ্ঞ।" আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় সাফা মারওয়ায় সায়ী করার সাথে আগের আয়াতগুলোর কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু যদি ভালোভাবে চিন্তা করেন... আমরা হাজেরা এবং ইসমাইল (আ) এর বিখ্যাত ঘটনার কথা জানি। ইসমাইলের জন্য পানি খুঁজতে তিনি এই দুই পাহাড়ের মাঝে সাত বার দৌড়াদৌড়ি করেন। সেই ঘটনার স্মরণে হজ্জ্ব এবং উমরা করার সময় এই দুই পাহাড়ের মাঝে আমরা সাত বার প্রদক্ষিণ করি, ...

আগুনের তৈরি জামা

ছবি
  প্রিয় ভাইয়েরা, জাহান্নামের তীব্র শাস্তিতে বেপরোয়া হয়ে জাহান্নামীরা জাহান্নামের রক্ষীদের ডাকতে থাকবে। আমি আগুনের তৈরি জামা পরে আছি, আমি আগুনের শিকল দিয়ে বন্দি, আমার খাবার জাক্কুম, আমার পানীয় হলো পঁচা গলা পূঁজ আর তীব্র গরম পানি, আমি তীব্র অন্ধকারে, আমি কিছুই দেখতে পাই না, কথা বলার কেউ নেই, অভিযোগ করার মত কোনো বন্ধু নেই, কোনো সাথী নেই।  আমার বিছানা দোজখের আগুনের, কোনো বিশ্রাম নেই, কোনো আরাম নেই, কোনো বিরতি নেই। মানুষ চিৎকার করে জাহান্নামের গার্ডদের ডাকতে থাকবে। মানুষ অসহনীয় যন্ত্রণায় মূর্ছা যাচ্ছে, একটা উপায় তো থাকতে হবে। দিনের পর দিন আমি শাস্তি ভোগ করছি। আমি কিছুই দেখতে পাই না, আমি খুবই সংকীর্ণ এক স্থানে। সমস্ত, সব ধরণের শাস্তি আজ একত্রিত হয়েছে। মানসিক, শারীরিক সব ধরণের। আমি সকল দিক থেকে আক্রান্ত হচ্ছি। এক আয়াতে আল্লাহ যেমন বলেছেন,  وَ یَاۡتِیۡهِ الۡمَوۡتُ مِنۡ كُلِّ مَكَانٍ وَّ مَا هُوَ بِمَیِّتٍ তার কাছে সকল স্থান থেকে মৃত্যু ধেঁয়ে আসবে, অথচ সে মরবে না। (১৪:১৭) মানুষ কাকুতি মিনতি করতে থাকবে, দয়া ভিক্ষা চাইবে, অনুনয় করবে এই গার্ডদের কাছে—বের হয়ে ...

শেষ বিচারের দিন আপনি একা

ছবি
  নিজের পরীক্ষার উপর ফোকাস করুন ----------------- * ----------------- শেষ বিচারের দিন আপনি একা একা বিচারের সম্মুখীন হবেন। দুনিয়াতে আপনাকে যে সমস্ত উপায় উপকরণ প্রদান করা হয়েছে, যেসমস্ত নেয়ামতরাজি প্রদান করা হয়েছে, যে পরিবেশ পরিস্থিতি প্রদান করা হয়েছে তার আলোকে আপনার বিচার হবে। এগুলোর আলোকে আপনি কি কি নেক আমল করেছেন, সম্ভাব্য যে নেক আমলগুলো আপনার দ্বারা করা সম্ভব ছিল তার কতটুকু আপনি করেছেন। তাই অন্যদের ব্যাপারে আপনি কিভাবে অভিযোগ করবেন যখন আপনার রেজাল্টের সাথে অন্যদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা এখন এমন এক যুগে বাস করছি যখন সমগ্র দুনিয়ার সকল তথ্য আমাদের আঙ্গুলের আগায়। দুনিয়ার যে কোন প্রান্তের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো আমরা মুহূর্তের মাঝেই জেনে যাচ্ছি। ফলে অনেক বেশি অর্থহীন তথ্য বা আমার নিজ জীবনের সাথে সম্পর্কহীন তথ্য আমরা জানছি। আর এগুলোতে আমাদের প্রচুর সময় ব্যয় হচ্ছে। মহা মূল্যবান সময়গুলো, যেগুলো দিয়ে আমি আমার পরকাল গড়ার কথা। তাই নিজের পরীক্ষার উপর ফোকাস করুন। আমাকে আল্লাহ কি কি উপায় উপকরণ দিয়েছেন? আমার পক্ষে কোন কোন ভাল কাজ করা সম্ভব? আমি আমার পর জীবনের জন্য আজকে কি কি পা...

জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবি সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস (রা.)

ছবি
  প্রখ্যাত সাহাবি হজরত সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস (রা.)। নবিজি (সা.)-এর খুবই প্রিয় একজন সাহাবি। তার সবচেয়ে মর্যাদার বিষয়-তিনি আশারায়ে মুবাশশারা তথা দুনিয়াতেই জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজন সাহাবির অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।  ইসলামের শুরুর যুগে সতেরো বছর বয়সে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। কেউ কেউ তাকে ইসলামের সতেরোতম ব্যক্তি হিসাবেও অভিহিত করেন। ৬৪৬ ও ৬৫১ সালে তাকে কূটনৈতিক দায়িত্ব দিয়ে চীনে পাঠানো হয়। ধারণা করা হয়, নৌরুটে চীন যাওয়ার পথে তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে থেমেছিলেন। এ সময় বাংলা অঞ্চলকে ইসলামের সঙ্গে পরিচয় করানোর ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকাও রেখেছিলেন।  প্রবল ধারণামতে, তিনি ৬৪৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের লালমনিরহাটে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন, যা স্থানীয়ভাবে ‘আবু আক্কাস মসজিদ’ নামে পরিচিত। চীনা মুসলিমদের মতে, চীনের ক্যান্টন বন্দরে তার কবর। তবে আরবদের মতে তার কবর আরবেই অবস্থিত। এছাড়া তিনি ইসলামের ইতিহাসে প্রথম তির নিক্ষেপকারী ছিলেন। মদিনায় হিজরতের পর প্রথম বছরই নবিজি (সা.) ৬০ জন সাহাবির একটি দল আবু সুফিয়ানের একটি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। এটি ছিল ইসলামের প্রথম সারিয়া। ‘রাগিব’ নামক স্থানে গিয়ে দুই...

বারবার কসম ভঙ্গ করলে কতবার কাফফারা দিতে হবে?

ছবি
  প্রশ্ন: আমি আল্লাহর কাছে বার বার শপথ করেছি যে, আমি এই কাজটি আর করব না। কিন্তু বার বার ভঙ্গ করে ফেলি। সম্প্রতি আমি জেনেছি যে কাফফারা দিতে হয় তো আমি সকল কাফ্ফরা একবারেই দিয়ে দিতে পারবো কি? আর আমি জানিনা কতবার ওয়াদা ভঙ্গ করেছি। উত্তর: প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কসম ভঙ্গ করার কারণে আপনাকে কাফফারা আদায় করতে হবে। এক্ষেত্রে একবার কসম করে তা ভাঙ্গার পূর্বে সেই বিষয়ের কসম বারবার পুনরাবৃত্তি করার দ্বারা যদি আপনি ভিন্ন করে কসমের উদ্দেশ্য না নিয়ে থাকেন; বরং পূর্বের কসমেরই পুনরাবৃত্তি করা এবং তা দৃঢ় করা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তাহলে এক্ষেত্রে প্রতি কসমের উপর কাফফারা আসবে না।  বরং এভাবে কসমগুলো করার পর যখন কসম ভঙ্গ হয়েছে তখন একটি কাফফারা দিতে হবে। এরপর যদি আবার কসম করা হয় এবং তা ভঙ্গ করা হয় তাহলে পুনরায় কাফফারা দিতে হবে। (কিতাবুল আসল ৩/২৩৮, ৩/১৯৬ আলমাবসূত, সারখসী ৮/১৫৭ ইলাউস সুনান ১১/৪২৬) একটি কসমের কাফফারা হল, দশজন গরীব মিসকীনকে দু’ বেলা তৃপ্তিসহ খানা খাওয়ানো। অথবা তাদের প্রত্যেককে এক জোড়া করে কাপড় দেওয়া। এ দুটির সমার্থ্য না থাকলে এক নাগাড়ে তিনটি রোযা রাখা।  এ কাফফারা প্রতিটি কস...

মক্কার জমজম কূপের উৎপত্তি

ছবি
  হজরত ইবনে আব্বাস (রা.)-র বরাতে এই হাদিসটির বর্ণনা আছে। তিনি নবী (সা.)-এর কাছে নিচের ঘটনাটি শুনেছেন। নারীজাতি প্রথম কোমরবন্ধ বানানো শিখেছে ইসমাইল (আ.)-এর মায়ের কাছ থেকে। হাজেরা (আ.) কোমরবন্ধ লাগাতেন সারা (আ.)–এর কাছে নিজের মর্যাদা গোপন রাখার জন্য। হাজেরা (আ.) শিশুসন্তান ইসমাইল (আ.)–কে দুধ পান করানোর সময়ে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁদের নিয়ে বের হলেন। কাবার কাছে মসজিদের উঁচু অংশে জমজম কূপের ওপরে অবস্থিত একটা বিরাট গাছের নিচে ইব্রাহিম (আ.) তাঁদের দুজনকে রাখলেন। তখন মক্কায় মানুষ বা পানির ব্যবস্থা কিছুই ছিল না। একটি থলের মধ্যে কিছু খেজুর আর একটি মশকে কিছু পরিমাণ পানি দিয়ে সেখানেই তাঁদের রেখে ইব্রাহিম (আ.) ফিরে চললেন। ইসমাইল (আ.)-র মা পিছু পিছু এসে বারবার বলতে লাগলেন, হে ইব্রাহিম! আপনি কোথায় চলে যাচ্ছেন? আপনি আমাদের এমন এক ময়দানে রেখে যাচ্ছেন, যেখানে কোনো সাহায্যকারী বা কোনো ব্যবস্থাই নেই। ইব্রাহিম (আ.) তাঁর দিকে তাকালেন না। হাজেরা (আ.) তাঁকে বললেন, আল্লাহই কি আপনাকে এ আদেশ দিয়েছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। হাজেরা (আ.) বললেন, তাহলে আল্লাহ আমাদের ধ্বংস করবেন না। তিনি ফিরে এলেন। ইব্রাহিমও (আ.) সামনে...

আয়েশা সিদ্দিকা (রা.)

ছবি
  আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) ছিলেন প্রথম খলিফা আবু বকর (রা.)–এর মেয়ে। আয়েশা (রা.)–এর গায়ের রং ছিল সাদা ও লালের মিশ্রণে। তাই তাঁকে ‘হুমায়রা’ বলেও সম্বোধন করা হতো। আয়েশা (রা.) রাসুল (সা.)–এর কাছ থেকে তিনি ইসলাম সম্পর্কে প্রভূত জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। তিনি ইতিহাস ও সাহিত্যের জ্ঞানার্জন করেছিলেন তাঁর বাবার কাছ থেকে। চিকিৎসা শাস্ত্রের জ্ঞান লাভ করেন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাসুল (সা.)–এর দরবারে আসা আরব গোত্রের প্রতিনিধিদলের কাছ থেকে। হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.)–কে বিয়ে করার আগে রাসুল (সা.) এর সুসংবাদ পেয়েছিলেন। একদিন তিনি স্বপ্নে দেখেন, একজন ফেরেশতা একখণ্ড রেশমি কাপড়ে কিছু একটা মুড়ে এনে বলল, ‘এ আপনার স্ত্রী।’ রাসুল (সা.) সেটি খুলে দেখলেন তার মধ্যে আয়েশা (রা.)। (মুসলিম, হাদিস: ২,৪২৮) আয়েশা (রা.) মহানবী (সা.)–এর স্নেহ, ভালোবাসা ও শিক্ষার নিবিড় সংস্পর্শে বড় হয়েছিলেন। রাসুল (সা.) আয়েশা (রা.)–কে গভীরভাবে ভালোবাসতেন। তাঁদের দাম্পত্যজীবনে ছিল পারস্পরিক সহমর্মিতা, আবেগ ও নিষ্ঠা। আয়েশা (রা.)–কে খুশি করার জন্য রাসুল (সা.) তাঁকে মাঝেমধ্যে গল্পও শোনাতেন। কখনো আবার আয়েশা (রা.)–র গল্পও শুনতেন। একবার...

এক শ বছর পর জীবিত

ছবি
  হজরত ইবরাহিম (আ.) জাতিকে তওহিদের দাওয়াত দিয়েছেন। তার বাবাকে তওহিদের প্রতি আহ্বান করেছেন, মূর্তি ভেঙেছেন। শাসক নমরুদ ইবরাহিম (আ.)-এর সঙ্গে বিতর্ক হয়। ইবরাহিম (আ) বলেন, আমার আল্লাহ তিনি, যিনি জীবন-মৃত্যু দান করেন। তখন নমরুদ বলল, আমিও তো জীবন ও মৃত্যু দান করি। এ বলে সে দুজন জীবন্ত লোক আনতে বলল। একজনকে মেরে ফেলল অন্যজনকে ছেড়ে দিল। আর বলল এই যে আমি যাকে ইচ্ছা জীবন ও মৃত্যু দিই। তারপর ইবরাহিম (আ.) সূর্য উদয় ও অস্তের কথা বললেন, তখন নমরুদ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেল। আল্লাহ তাঁর ক্ষমতা দেখানোর ইচ্ছা করলেন। গাধাসহ এক লোককে মৃত্যু দিয়ে একশত বছর মৃত রাখেন। তার সঙ্গে রাখা খাবার নষ্ট করলেন না। এক শ বছর পর জীবিত করে বললেন, ‘তুমি এ অবস্থায় কত দিন ছিলে?’লোকটি বলল, ‘এক দিন অথবা এক দিনের কিছু সময়। পুনরায় যখন জীবিত হলো তখন সূর্য অস্ত যাচ্ছিল। লোকটি ভাবল হয়তো দিনের মধ্যবর্তী সময়টুকু মৃত অবস্থায় ছিলাম। আল্লাহ জানিয়ে দিলেন, তুমি এক শ বছর মৃত ছিলে এবং আল্লাহ নিদর্শনগুলোও দেখিয়ে দিলেন। আল্লাহ সব বিষয়ে ক্ষমতাবান, তিনি ইচ্ছা করলে হাজার বছর পরেও মৃতকে জীবিত করতে পারেন, মানুষ মরে পচে গলে গেলেও পুনর্জীবিত করা তা...

সেদিন কেউ কারো কোনো খবর রাখবে না

ছবি
  আপনারা বিচার দিবসের বর্ণনা আগেও শুনেছেন। সেদিন কেউ কারো কোনো খবর রাখবে না। یَوۡمَ تَرَوۡنَهَا تَذۡهَلُ كُلُّ مُرۡضِعَۃٍ عَمَّاۤ اَرۡضَعَتۡ --(সূরা হজ্ব-২২, আয়াত ২) এমনকি মা যিনি তার বাচ্চাকে দুধ খাওয়াচ্ছেন, জাস্ট তাকে কোল থেকে ফেলে দিবেন। এতোটা ভয়ংকর বিচার দিনের বর্ণনা। یَفِرُّ الۡمَرۡءُ مِنۡ اَخِیۡهِ -  وَ اُمِّهٖ وَ اَبِیۡهِ - وَ صَاحِبَتِهٖ وَ بَنِیۡهِ - (সূরা আবাসা, আয়াত, ৩৪-৩৬) وَ فَصِیۡلَتِهِ الَّتِیۡ تُــٔۡوِیۡهِ -- (সূরা মাআরিজ, আয়াত, ১৩) আপনি আপনার মা থেকে পালাবেন, বাবা থেকে, ভাই থেকে, স্বামী/স্ত্রী থেকে। আপনি আপনার সমগ্র গ্রামবাসি থেকে পালাবেন। পরিচিত সকল মানুষ থেকে। তাদের দেখলেই উল্টো দিকে পালিয়ে যাবেন। কারো ব্যাপারে কোনো পরোয়া করবেন না। বস্তুতঃ لَوۡ یَفۡتَدِیۡ مِنۡ عَذَابِ یَوۡمِئِذٍۭ بِبَنِیۡهِ-- এ আয়াতের কয়েকটি আয়াত পরে আল্লাহ বলেন, وَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ جَمِیۡعًا ۙ ثُمَّ یُنۡجِیۡهِ - মানুষ সেদিন বলবে, ইয়া আল্লাহ! দরকার হলে অন্য সমস্ত মানুষ! আদম (আ) থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত যত মানুষ আছে সবাইকে জাহান্নামে ফেলেন, কিন্তু আমাকে বাঁচান। এটাই সেদিন তারা বলবে। "ওমান...

ঈমানদার ব্যক্তিও আঁধারে পড়ে যেতে পারে

ছবি
  বহু মানুষ নিজের ভেতর বহু অশ্রু জমা করে আছে। বহু গভীর অশ্রু তাদের জমা হয়ে আছে। সে শুধু শুনতে চায়, আল্লাহ তাকে ভুলে যাননি। আল্লাহ তাকে ভালবাসেন। আল্লাহ তাকে জাহান্নামে ফেলতে চান না। যদি সে ভুল করে থাকে, আল্লাহর অত্যন্ত যত্ন এবং ভালোবাসাসহ বলার পদ্ধতি আছে যে, তার কাজটা কতটা ভুল ছিল। এখন, তার পথ পরিবর্তন করার সময়। তাকে শুধু কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে, শক্তি জোগাড় করে আল্লাহর পথে হাঁটা শুরু করতে হবে। এমনকি সে যদি ঈমানদারও হয়ে থেকে এবং কোনো কারণে শয়তানের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে তার জীবনটা আজ দুর্বিষহ হয়ে গেছে। এমন অন্ধকার গর্তে পড়ে গেছে যে জীবনে কোনোদিন কল্পনা করেনি সে এমন কাজ করবে। তার আশে পাশের মানুষজন তার নাম মুছে ফেলেছে। তারা তাকে পরিত্যাগ করেছে। সেদিন ফজরের সময় এক যুবকের সাথে কথা হলো। সে শুধু আমার সাথে কিছু কথা শেয়ার করতে চেয়েছিল। সে বলল, আমি কি আপনার দশটা মিনিট সময় পেতে পারি? আমি বললাম, কোথা থেকে এসেছ তুমি? সে ত্রিশ মাইল দূর থেকে এখানে ফজর পড়তে এসেছে। আমি বললাম, আচ্ছা বসো। আর সে আমার কাছে সময় চেয়েই লজ্জিত হয়ে পড়েছিল। আমাদের অডিটোরিয়ামে আমি তার সাথে বসলাম। আমার মনে হয়, প্রথম পা...

ভালো কাজ

ছবি
  মানুষ বিভিন্ন ধরণের পুণ্যের কাজ করে থাকে। কারো পক্ষেই সকল ভালো কাজ সমানভাবে করা সম্ভব নয়। কিছু মানুষ রোজা পালনে দক্ষ। এটা তাদের প্রধান সওয়াবের কাজ। অন্য কেউ হয়তো দান-সদকার কাজে উত্তম। এটাই তার প্রধান ভালো কাজ। এভাবে যার যে ধরণের পুণ্যের কাজের প্রতি ঝোঁক বেশি, সে ঐ কাজ বেশি বেশি করে বা ঐ কাজে সে বেশি দক্ষ। তার আমলনামায় ঐ ভালো কাজের পরিমাণ বেশি। তাই, যে ভালো কাজ আল্লাহ আপনার জন্য সহজ করে দিয়েছেন এবং আপনার কাছে অতিশয় মূল্যবান মনে হয়, যত বেশি পারেন তা করতে থাকুন। এটাকে আপনার প্রধান অভ্যাসে পরিণত করুন। কেন? কারণ, আপনাকে জান্নাত দেওয়া হবে আপনার ঐ কাজের উপর ভিত্তি করে যে কাজটা আপনি খুবই আগ্রহ সহকারে বারবার করতেন। সবকিছু উজাড় করে যা করতেন। যেটা আপনি সবচেয়ে বেশি সংখ্যকবার করেছেন। যে কাজটা নিয়মিত করতেন। জান্নাতে প্রবেশের আটটি দরজা আছে। আটটি ক্যাটাগরি আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি অন্তত একটিতে খুব ভালো করেন, ইনশাআল্লাহু তায়ালা ঐ দরজাগুলোর একটি আপনাকে প্রবেশ করার আহ্বান জানাবে। এমন অনেক মানুষ থাকবে যাদেরকে দুইটি দরজা আহ্বান করবে। সে তখন পছন্দ করতে পারবে কোনটা দিয়ে সে প্রবেশ করবে। কাউকে তিন...

আলী (রা.) এর শেখানো ঋণ মুক্তির দোয়া

ছবি
  একবার এক লোক ঋণ পরিশোধের জন্য ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (রা.)-এর কাছে কিছু সাহায্য চাইলেন। আলী (রা.) তাঁকে বললেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে কয়েকটি শব্দ শিখিয়ে দিয়েছিলেন, আমি কি তোমাকে সেটা শিখিয়ে দেব? সেটা পড়লে আল্লাহ তোমার ঋণমুক্তির দায়িত্ব নেবেন। তোমার ঋণ যদি পর্বতপ্রমাণ হয়, তাহলেও।’ এরপর আলী (রা.) ওই ব্যক্তিকে কথাগুলো শিখিয়ে দিলেন, ‘আল্লাহুম্মাক ফিনি বি হালালিকা আন হারামিকা, ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক।’ অর্থাৎ হে আল্লাহ, হারামের পরিবর্তে তোমার হালাল রুজি আমার জন্য যথেষ্ট করো। আর তোমাকে ছাড়া আমাকে কারও মুখাপেক্ষী কোরো না এবং তোমার অনুগ্রহ দিয়ে আমাকে সচ্ছলতা দান করো। (তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৬৩; মুসনাদে আহমদ: ১৩২১) আর্থিক দুরবস্থায় পড়লে মানুষ ঋণ নিতে বাধ্য হয়। ঋণের টাকায় প্রয়োজন পূরণের চেষ্টা করে। তবে সাধ্যের বাইরে ঋণ দেওয়া-নেওয়া দুটিই ইসলাম নিষেধ করেছে। কারণ, তাতে সময়মতো ঋণ পরিশোধের সম্ভাবনা কমে যায়। এর ফলে ঋণদাতাকে যেমন হতাশাগ্রস্ত হতে হয়, ঋণগ্রহীতার আত্মমর্যাদাও ক্ষতির শিকার হয়।ঋণ মুক্তির দোয়া ও হাদিস মহানবী (সা.) আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন, যাতে তিনি ঋণে জড়িয়...

আল্লাহ কি আমাকে কোনদিন মাফ করবেন?

ছবি
  আল্লাহ কি আমাকে কোনদিন মাফ করবেন? --------------- * ---------------- * ------------------ আমি চাই না কেউ অনুশোচনায় দগ্ধ এক জীবন যাপন করুক। আল্লাহ আমাদেরকে এ ধর্ম এ জন্য দান করেননি যে, আমরা অতীতের ভুল নিয়েই পড়ে থাকবো। কুরআনের অন্যতম মহান একটি লক্ষ্য হলো...আল্লাহ বলেন— اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَذِکۡرٰی لِمَنۡ کَانَ لَهٗ قَلۡبٌ اَوۡ اَلۡقَی السَّمۡعَ وَ هُوَ شَهِیۡدٌ - নিশ্চয় এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্য, যার রয়েছে অন্তর অথবা যে নিবিষ্টচিত্তে শ্রবণ করে। (৫০:৩৭) তাই হৃদয় সম্পর্কিত যেকোনো বিষয়, সবচেয়ে বিস্তীর্ণ উত্তর, আপনার হৃদয়ের অনুভূতি কেমন হওয়া উচিত—তা কুরআনে আছে। কুরআনের মতে—কেউ যদি সমগ্র জীবন পাপ-পঙ্কিলতায় কাটিয়ে দেয়, বিস্মৃতিতে কাটিয়ে দেয়, ভুল-ত্রুটিতে কাটিয়ে দেয়, উপেক্ষায় কাটিয়ে দেয় ইত্যাদি ইত্যাদি...আল্লাহ কি বলেছেন যে, এখন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বাকি জীবনটা তোমাকে অতীত জীবনের অনুশোচনায় জ্বলে পুড়ে কাটাতে হবে? কুরআন কি কখনো এমনটি বলেছে? আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির অন্তঃকরণের সুরক্ষায় বেশি সংরক্ষণশীল সৃষ্টির নিজের চেয়েও। আমি নিজের অন্তরের প্রতি যতটা যত্নশীল আল্লাহ আমার অন্তরের প্রতি তার চেয়...

জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত সর্বশেষ মানুষ

ছবি
  || জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত সর্বশেষ মানুষ || . আমাদের কাছে চমৎকার একটি হাদিস রয়েছে একেবারে সর্বশেষ জান্নাতে প্রবেশকারী মানুষটি সম্পর্কে। জান্নাতে প্রবেশকারী একেবারে সর্বশেষ মানুষটি। এই হাদিসটি সহীহ মুসলিমে বর্ণনা করেছেন ‘আব্দুল্লাহ ইবনে মাস’উদ (রা)। তিনি বর্ণনা করেছেন যে, রসূল (স) বলেছেন, সর্বশেষ জান্নাতে প্রবেশকারী ব্যক্তিটি জাহান্নাম থেকে বের হবার জন্য জাহান্নামের দরজা অভিমুখে কষ্ট সহকারে হাঁটতে থাকবে। কখনো তার পা পিছলে যাবে, কখনো সে পড়ে যাবে। এরপর সে উঠে দাঁড়াবে এবং হাঁটা অব্যাহত রাখবে। আর আগুনের শিখা বারবার তার কাছে এসে তাকে দগ্ধ করতে থাকবে এবং ফিরে যেতে থাকবে। এরপর অবশেষে সে বের হবে। এর আগেই তাকে জানিয়ে দেয়া হবে যে সে বের হওয়ার অনুমতিপ্রাপ্ত হয়েছে। সে মূলত সর্বশেষ ব্যক্তি। . এখন সে সেই শাস্তির স্থান থেকে হেঁটে বেরিয়ে আসছে। আর এই হাঁটাটি সহজ কোনো বিষয় নয়। দীর্ঘ সময়ের শাস্তির পর অবশেষে সে এখন বের হতে পারছে, কিন্তু শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাকে কষ্ট সহকারে হাঁটতে হবে। এরপর অবশেষে যখন সে সেই এলাকা থেকে বের হবে, তখন পেছনে ফিরে তাকাবে এবং বলবে, تَبَارَكَ الَّذِي نَجَّانِي مِنْكِ -...