Posts

Showing posts from May, 2023

নবীদের প্রধান একটি কাজ

Image
  আল্লাহ তায়ালা নবী রাসূল পাঠিয়েছেন আমাদের গাইড করার জন্য। কোন পথে চলতে হবে তা শেখানোর জন্য। নবীদের অন্যতম প্রধান একটি কাজ হলো মানবতাকে পথ প্রদর্শন করা। এমন দিকগুলোর গাইডেন্স যেখানে মানুষ নিজের বুদ্ধি দিয়ে পৌঁছতে পারবে না। আল্লাহ তায়ালা এই জীবনের খুঁটিনাটি শেখানোর জন্য নবী রাসূল পাঠান না। তা তিনি আমাদের জ্ঞান বুদ্ধির নিকট ছেড়ে দিয়েছেন। যাও তোমাদের টেকনোলজি নির্মাণ করো, যাও আরো বড় টাওয়ার নির্মাণ করো, যাও চাঁদে যাও, পারলে মঙ্গলে যাও এবং ফিরে আসো—এগুলো বুদ্ধির কাজ। এ জন্যই কোনো নবী ইঞ্জিনিয়ারিং শেখানোর জন্য আসেন নি। কোনো নবীই আংশিক ডিফারেনশিয়াল সমীকরণ শেখানোর জন্য আসেননি। যাও যে সমীকরণ শিখতে চাও শেখো। কোনো ধরণের ব্যতিক্রম ছাড়াই সকল নবীই এমন এক জ্ঞান শিক্ষা দিতে এসেছেন, যে জ্ঞানে কেউই নিশ্চিতভাবে পৌঁছতে পারবে না। এমন এক জ্ঞান শিক্ষা দিতে এসেছেন যা ইঞ্জিনিয়ারিং এর জ্ঞানের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মেডিসিনের জ্ঞানের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনো বস্তুগত জ্ঞানের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর সে জ্ঞানটি হলো— এই পৃথিবীতে কেন আমরা বেঁচে আছি। সে জ্ঞানটি হলো— কে আমাদের সৃষ্টি করেছেন। সে

সবর এবং শোকর।

Image
  দুটি মূল্যবোধ আপনার ব্যক্তিত্বের মাঝে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় থাকতে হবে। সেগুলো হলো সবর এবং শোকর। ধৈর্য এবং কৃতজ্ঞতাবোধ। প্র্যাকটিক্যাল্লি বলতে গেলে—মনে করুন, একজন মানুষ জীবনে কঠিন একটি সময় অতিক্রম করছে। সে সময় তার ধৈর্য দরকার। কোন জিনিসটি তাকে ধৈর্য প্রদান করবে? শোকর। কিভাবে এটি কাজ করে? ধরুন, আমি খুবই অসুস্থ হয়ে পড়লাম। আমার এক হিতাকাঙ্খী এসে বললো, — ধৈর্য ধরো। — আমি জানি ধৈর্য ধরতে হবে। কিন্তু শরীরের ব্যথা তো যাচ্ছে না। কিন্তু সে সময় আমি যদি একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করি। যদি নিজের মন মানসিকতাকে অন্য দিকে ধাবিত করি, জীবনের যে ব্যাপারগুলো এখনো ভালোভাবে চলছে সেগুলোর দিকে মনোযোগ প্রদান করি.... আলহামদুলিল্লাহ, ব্যাপারটা আরো অনেক খারাপ হতে পারতো। আলহামদুলিল্লাহ, এতে নিশ্চয়ই কল্যাণকর কিছু আছে। এভাবে নিজের অন্তরে কৃতজ্ঞতার অনুভূতি জাগ্রত করুন। যখন এভাবে কৃজ্ঞতাবোধে নিজের অন্তর পূর্ণ করে তুলবেন, তখন কোন ব্যাপারটা সহজ হয়ে উঠবে? ধৈর্য ধরা। সবর করাটা তখন অতটা তিক্ত মনে হবে না। অতএব, এ দুটো জিনিস পরস্পর নির্ভরশীল। যেমন, পাখির দুটো ডানা। শুধু একটি দিয়ে কাজ হবে না। আপনার দুটোই দরকার। সবর এবং

আত্মার খাদ্য

Image
  আত্মার খাদ্য। ------------ আমাদের সবার জীবনে এমন একটি সময় আসে, প্রতিটি ব্যক্তির জীবনে এই সময়টি আসে, যখন তারা বুঝতে পারে যে, খাওয়া-দাওয়া এবং ফুর্তি করার চেয়েও জীবনের আরো অর্থ আছে। আমাদের চারপাশে এত বেশি পরিমাণে ডিপ্রেশন এবং একাকীত্ব দেখতে পাওয়ার এটা অন্যতম একটা কারণ হতে পারে—আল্লাহ ভালো জানেন। মানুষকে এখন খুব অল্প বয়সেই সব ধরনের আনন্দের উপকরণ সরবরাহ করা হচ্ছে। খুব তরুণ বয়সেই তারা সবকিছু আবিষ্কার করে ফেলছে। এরপর বলে— "না, এটা যথেষ্ট না। আমার আরো চাই। আমি সন্তুষ্ট হতে পারছি না। আমার সবকিছুই আছে কিন্তু তবুও ভেতরটা কেমন যেন ফাঁকা।" সম্ভবত আধুনিক টেকনোলজির সকল অবদান এবং এর সাথে আসা সমস্ত আনন্দ-বিনোদন তরুণ প্রজন্মের মাঝে জীবনের আবিষ্কারগুলোকে ত্বরান্বিত করে ফেলেছে। সম্ভবত এই কারণে… আর আল্লাহ ভাল জানেন। এটা শুধু আমার ভাবনা। সম্ভবত এটি অন্যতম একটি কারণ যার ফলে আমরা চারদিকে এত বেশি ডিপ্রেশন, শূন্যতা এবং আধ্যাত্মিক একাকীত্ব দেখতে পাচ্ছি। কারণ, বর্তমানে তারা ২০ বছর বয়সে যা জানছে, আগের যুগের একজন মানুষের এগুলোর সন্ধান পেতে সারা জীবন ব্যয় করতে হয়েছে বা পঞ্চাশের পর জেনেছে।

হজের পূর্বশর্ত

Image
  মাশা আল্লাহ আপনি হজের নিয়ত করেছেন এবং হজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সব আয়োজন প্রায় সম্পন্ন; কিন্তু হজ পালনের নিয়ম সম্পর্কে আপনার রয়েছে কৌতূহল, আছে জানার ইচ্ছা। আসুন, আমরা হজ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি এবং এটি পালনের নিয়মগুলো সম্পর্কে জেনে নিই। হজ ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ। সুরা আল–ইমরানের ৯৭তম আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে যাঁদের মক্কায় কাবায় যাওয়ার আর্থিক সামর্থ্য আছে, তাঁর কর্তব্য হজ পালন করা। আর যে অবিশ্বাসী, হজকে অস্বীকার করল, সে আল্লাহকে অস্বীকার করল।’ প্রত্যেক মুসলমান নর বা নারীর জীবনে একবার হজ পালন করা ফরজ হলেও সবার ওপর হজ ফরজ নয়। হজ পালন করার কিছু পূর্বশর্ত আছে। আসুন, এগুলো জেনে নিই। হজের পূর্বশর্তগুলো হলো, যিনি হজ করবেন তাঁকে অবশ্যই: ·      মুসলমান হতে হবে; ·      প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে; ·      মানসিক ভারসাম্যপূর্ণ হতে হবে; ·      হজে যাওয়ার আর্থিক সামর্থ্য থাকতে হবে এবং সেই অর্থ অবশ্যই হালালভাবে উপার্জিত হতে হবে। হজের জন্য ধার করা যাবে না; ·      শারীরিকভাবে সক্ষম হতে হবে; এবং ·      (নারীদের সঙ্গে) মাহরাম থাকতে হবে। বর্তমানে সৌদি সরকার মাহরামের নিয়ম সহজ করে দিয়েছে। তাই অনেকেই এ

ওহুদের শিক্ষা

Image
  ইসলামের দ্বিতীয় যুদ্ধ ওহুদ ৩ হিজরির শাওয়াল মাসে সংঘটিত হয়। মদিনার মসজিদে নববি থেকে উত্তরে পাঁচ কিলোমিটার দূরে ওহুদের প্রান্তর। বদর যুদ্ধের ঠিক এক বছর পর ওহুদ যুদ্ধ হয়। মক্কার অমুসলিম ও মদিনার মুসলিমদের মধ্যে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। বদর যুদ্ধের পরাজয়ের শোক মক্কার জনগণ মানতে পারছিল না। ওই যুদ্ধে বেঁচে যাওয়া নেতারা পরামর্শ করলেন আবু সুফিয়ানের বাণিজ্য কাফেলায় যাঁদের ব্যবসা রয়েছে, তাঁরা শুধু মূলধন ফেরত পাবেন। লভ্যাংশের টাকায় সামরিক শক্তি অর্জন করে মুসলমানদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়া হবে। ঘরে ঘরে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল। কিনানা ও তিহামা গোত্রের লোকেরা একেবারে প্রস্তুত হয়ে গেলেন। হাবশিরা বর্শা নিক্ষেপে পারদর্শী, তাঁদের তির লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় না। তাই ওয়াহশি নামের এক হাবশি দাসকে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার বদলে তাকে মুক্তির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলো। যুদ্ধের সব প্রস্তুতি শেষে মদিনার দিকে রওনা হয় আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে তিন হাজারের বেশি যোদ্ধা। তাদের মধ্যে ৭০০ যোদ্ধা ছিল বর্মপরা। ছিল ২০০ ঘোড়া ও ৩০০০ উট। সঙ্গে নেওয়া হলো নারীদের। তাদের কাজ ছিল গানে গানে যোদ্ধাদের মনোবল চাঙা রাখা। অপরদিকে মুসলিম বাহিনীর মোট সেনাসংখ্য

জীবনটা বড্ড কঠিন?

Image
  দেখা যায় একদল মানুষের জন্য জীবনটা বড্ড কঠিন। আর অন্য একদল মৌজ মাস্তিতে মেতে আছে। কিন্তু, বিলাসবহুল প্রাসাদ আর বাড়িগুলোর দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকবেন না বা বন্য পার্টিগুলোর দিকে এবং অনিয়ন্ত্রিত আত্ম-পূজার দিকে, যেখানে মানুষগুলো তাদের প্রতিটি কু-প্রবৃত্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়; বা আপনার ফোনের মাধ্যমে মাত্রাতিরিক্তভাবে ফিল্টার করা অপরের সুখের দিকে। কারণ, ঐ স্ক্রিনগুলোর পেছনে এবং ঐ প্রলেপগুলোর নিচে থাকে সম্ভবত ভিন্ন ধরণের কষ্ট এবং শূন্যতার বাস। আমাদের যার অবস্থা এই জীবনে যেমনই হোক না কেন, আমাদের সবার অনিবার্য পরিণতি একই (মৃত্যু)। কিন্তু বাহ্যিক দৃষ্টিতে যা দেখা যায় প্রকৃত অবস্থা আসলে তা নয়। ঐ সমাধিগুলোর ভেতরে কারো জন্য আছে পুরস্কারের বাগান আর কারো জন্য আছে শাস্তির প্রকোষ্ঠ। আর আমাদের হৃদয়গুলোতে থাকে হয় নিশ্চয়তার আনন্দ, এটা জেনে যে, এই জগতের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত এক জগৎ বর্তমান আছে অথবা থাকে শূন্যতার কষ্ট একেবারেই না জানার কারণে। ও বিশ্বাসীরা! মন দিয়ে শোনো, এ পৃথিবী কোনোদিনও তোমাদের বেহেশত হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু বেহেশত আমাদের অপেক্ষায় আছে, এ জ্ঞান, দুনিয়ার এ কষ্টকর ভ্রমণটাকে করে ত

আল্লাহর সাথে একটি সুন্দর সম্পর্ক

Image
  আল্লাহর সাথে একটি সুন্দর সম্পর্ক থাকার আনন্দ পৃথিবীর যে কোনো আনন্দের চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান এবং অতিশয় সুমিষ্ট। আপনার হৃদয়ে যদি এ আনন্দ থেকে থাকে তাহলে দুনিয়ার অন্যান্য সুখগুলো আপনাকে আর সেভাবে আনন্দিত করে না। তাই আপনি চাইবেন অন্তরের সে মান সবসময় বজায় রাখতে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন- اِنَّ الۡاَبۡرَارَ لَفِیۡ نَعِیۡمٍ- "নিশ্চয় সৎকর্মপরায়ণরা থাকবে নানান নেয়ামতের মাঝে।" وَ اِنَّ الۡفُجَّارَ لَفِیۡ جَحِیۡمٍ - یَّصۡلَوۡنَهَا یَوۡمَ الدِّیۡنِ - “আর নিশ্চয় অন্যায়কারীরা থাকবে প্রজ্জ্বলিত আগুনে। কর্মফলের দিন তারা তাতে প্রবেশ করবে।” সূরা আল-ইনফিতার, ১৩-১৫। খেয়াল করে দেখুন, আল্লাহ যখন নেককারগণের কথা বললেন এবং বললেন যে তারা থাকবে নানান নেয়ামতের মাঝে; তিনি এখানে কোনো সময়ের উল্লেখ করেননি। আর যখন মন্দ লোকদের কথা বললেন, তিনি বললেন তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে শেষ বিচারের দিন। এখানে সময়ের উল্লেখ করা হলো। এখান থেকে আমাদের আলেমেরা বলেন, "ইন্নাল আবরারা লাফিই নায়িম" সৎকর্মপরায়ণরা অবিরাম আশীর্বাদে থাকে এ দুনিয়াতে এবং পরকালে। আর মন্দ লোকেরা হয়তো আংশিকভাবে এ দুনিয়া উপভোগ করবে,

হজযাত্রী মা-বোনদের জন্য দুটি কথা

Image
  ● হজে গেলে প্রতি ওয়াক্তে আপনাকে জামাতে নামাজ পড়তে হবে। তাই পরিচিত কারও কাছ থেকে জামাতে নামাজ পড়ার নিয়মটি জেনে নিন। ● হজ বা ওমরাহে গেলে অনেক দোয়া, দরুদ, সুরা, আয়াত মুখস্থ করতে হবে, তা নয়। কাজেই এসব দোয়া মুখস্থ করতে গিয়ে শুধু শুধু চিন্তা করবেন না। বই দেখে দেখে সবকিছু পড়া যাবে। শুধু নিয়মগুলো জেনে নেবেন কোথায় কী করতে হবে। ● নারীদের হজে যেতে হলে মাহরামের প্রয়োজন হয়।  ● নারীরা ইহরাম হিসেবে সেলাই করা যেকোনো পোশাক পরতে পারেন। ● ইহরাম অবস্থায় নারীরা মুখমণ্ডল আবৃত রাখবেন না। ● ইহরাম অবস্থায় নারীরা গয়না পরিধান করতে পারবেন। জুতা বা স্যান্ডেল এবং মোজা পরতে পারবেন।  ● নারীদের ইজতিবা করতে হবে না।  ● তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে দ্রুত ও বীরদর্পে চলাকে রমল করা বোঝায়। নারীদের জন্য রমল করারও প্রয়োজন নেই। ● ঋতুমতী নারীদের জন্য নামাজ আদায় ও তাওয়াফ করা যাবে না। এ ছাড়া ইহরাম বাঁধা, সাঈ করা এবং হজের অন্যান্য কার্যক্রম করা যাবে।  ● সাঈ করার পুরো অংশই তাঁরা স্বাভাবিক গতিতে চলবেন।  ● ওমরাহ বা হজের পর নারীরা তাঁদের চুলের সামান্য অংশ (প্রায় এক সেন্টিমিটার বা আঙুলের এক কড়া পরিমাণ) কাটবেন।  ● মিনা ও আরাফাহর তাঁবুতে

মুসলিমের যে ১০টি কাজ করতে মানা

Image
  হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর বরাতে এ হাদিসের বর্ণনা আছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.)–এর বর্ণনা: আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে যখন কোনো ঋণী ব্যক্তির মরদেহ জানাজার জন্য উপস্থিত করা হতো, তিনি জিজ্ঞেস করতেন, তিনি তাঁর ঋণ পরিশোধের জন্য অতিরিক্ত সম্পদ রেখে গেছেন কি না। যদি জবাব হতো যে তিনি তাঁর ঋণ পরিশোধের মতো সম্পদ রেখে গেছেন, তখন তিনি তাঁর জানাজা পড়াতেন। নয়তো বলতেন, ‘তোমরা তোমাদের সঙ্গীর জানাজা আদায় করে নাও।’ পরে আল্লাহ যখন তাঁর বিজয়ের দরজা উন্মুক্ত করে দেন, তখন তিনি বললেন, ‘আমি বিশ্বাসীদের জন্য তাদের নিজের চেয়ে বেশি নিকটবর্তী। তাই কোনো বিশ্বাসী ঋণ রেখে মারা গেলে সেই ঋণ পরিশোধ করার দায়িত্ব আমার। আর যে ব্যক্তি সম্পদ রেখে যায়, সে সম্পদ তার উত্তরাধিকারীদের জন্য।’ বুখারি, হাদিস: ৪৭৬ ------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------ আবু হুরায়রা (রা.)–র বরাতে নিচের হাদিসটি বর্ণনা করা হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) জানিয়েছেন যে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘পরস্পর হিংসা কোরো না, একে অন্যের জন্য নিলাম ডেকে দাম বাড়িও না, পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষ পো

হজের আধ্যাত্মিক শিক্ষা

Image
  ইসলামের মৌলিক পাঁচটি ভিত্তির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হচ্ছে হজ। ‘হজ ’ অর্থ—কোনো মহৎ কাজের ইচ্ছা করা। হজের নিয়তসহ ইহরাম পরিধান করে নির্দিষ্ট দিনে আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা এবং পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফ করাকে হজ বলে। পবিত্র এই দিনে মহান আল্লাহর কাছে নিজের উপস্থিতি জানান দিয়ে পাপমুক্তির আকুল কামনায় লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান মিনা থেকে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হন। এরপর সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তাঁরা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করেন। মূলত হজ মুসলমানের জন্য একটি ফরজ ইবাদত। এটিকে মিশ্র ইবাদতও বলা হয়। কেননা এতে শারীরিক শক্তি ও অর্থ ব্যয়—দুটিরই প্রয়োজন। ইসলামে হজের অনেক গুরুত্ব রয়েছে হজরত ইবরাহিম (আ.) কাবাঘরের পুনর্নির্মাণ সমাপ্ত করে আল্লাহ তাআলার নির্দেশে হজের ঘোষণা দেন। তাঁর এ ঘোষণা তখন পৃথিবীতে বিদ্যমান ও কিয়ামত পর্যন্ত আগমনকারী সব মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। কিয়ামত পর্যন্ত যাঁরা হজ করবেন, তাঁরা সেদিন ইবরাহিম (আ.)-এর ওই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বলেছিলেন, ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির: ৩/২৬০) হাদিসে বর্ণিত রয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্ট

সবর, মুহসিন এবং পরীক্ষা পূর্ণ জীবন

Image
  সবর, মুহসিন এবং পরীক্ষা পূর্ণ জীবন ----------------------------- আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন— اِنَّ اللّٰهَ مَعَ الَّذِیۡنَ اتَّقَوۡا وَّ الَّذِیۡنَ هُمۡ مُّحۡسِنُوۡنَ - “আল্লাহ তাদের সাথে আছেন যারা তাকে ভয় করে এবং অনুগত থাকে এবং যারা মুহসিন (সুন্দরভাবে কার্য সম্পাদন করে।)” (১৬:১২৮) সুন্দরভাবে কাজ করার অর্থ কী? এর অর্থ সবর। কুরআনে 'ইহসানের' অন্য একটি নাম হলো সবর। এ জন্য সূরা ইউসুফে বলা হয়েছে— اِنَّهٗ مَنۡ یَّـتَّقِ وَ یَصۡبِرۡ فَاِنَّ اللّٰهَ لَا یُضِیۡعُ اَجۡرَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ - যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করে আর ধৈর্যধারণ করে এমন মুহ্সিনদের পুরস্কার আল্লাহ কক্ষনো বিনষ্ট করেন না।’ (১২:৯০) মুহসিন কারা? যারা ধৈর্যধারণ করে। কারণ যখন ধৈর্যধারণ করেন তখন কর্মগুলো সুচারুরূপে সম্পন্ন করেন। নামাজ পড়ার সময় আপনি তাড়াহুড়ো করেন না। সুন্দর করে নামাজ পড়েন। মানুষ আপনার জন্যে বিভিন্ন সমস্যা তৈরী করে তবু আপনি দয়া দেখান, তবু মানুষকে দিয়ে যান, তাদের প্রতি উদার থাকেন। ইউসুফ (আ) এর মত। তার ভাইয়েরা তার জন্য এতো সমস্যা তৈরী করলো, তবু তিনি তাদের সাথে ভদ্র আচরণ করেন। তবু তাদের মাফ করে দেন।

ফিরদাউসের উত্তরাধিকার যারা লাভ করবে

Image
  সুরাতুল মু'মিনিনে ফিরদাউসের উত্তরাধিকার যারা লাভ করবে তাদের দ্বিতীয় যে বৈশিষ্ট্যটি বর্ণনা করা হয়েছে তা হলো— وَ الَّذِیۡنَ هُمۡ عَنِ اللَّغۡوِ مُعۡرِضُوۡنَ - "আর যারা অনর্থক কথাকর্ম এড়িয়ে চলে।" আরবিতে اللغو মানে এমন কর্মকাণ্ড যা দুনিয়াবী দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো উপকার তৈরী করে না এবং যা পারলৌকিক দৃষ্টিকোণ থেকেও কোনো উপকার তৈরী করে না। এটা সাধারণত কথাবার্তা কিন্তু অন্য কার্যক্রমও হতে পারে। যেমন, বসে বসে অযথা কথা বলে সময় নষ্ট করা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিহ্বা চালাতে থাকলেন। যুবক বয়সে অযথা বকবক করাতে আপনি বেশ পটু থাকেন। বন্ধুদের সাথে রাত কাটাতে চলে গেলেন। "বুঝতে পারছি না কিভাবে রাতটা পার হয়ে গেল!" বন্ধুদের সাথে কথা বলতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু সারাক্ষণ বকবক করা!! ফোনটা তুলেই — দোস্ত জানিস কি হয়েছে? ঐ লোকটা কি করেছে? — ও তাই নাকি? বল তো কি হয়েছে। এভাবে শুরু হয়ে গেলো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এই মানুষগুলো যারা আল্লাহর সাথে কথা বলার একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলেছে, তারা কথার মূল্য বুঝতে পারে। তারা বুঝতে পারে আমাদের জিহ্বা ব্যবহার করতে পারার সামর্থ্যটা যে কত বড় একটি ব্যাপার!

সফলতা অর্জনকারী মুমিনদের বৈশিষ্ট্য

Image
  সফলতা অর্জনকারী মুমিনদের অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। প্রথম বৈশিষ্ট্যটি হলো— বিশেষ করে তারা তাদের নামাজে খুশু বজায় রাখে। এখানেও একটি ব্যাপার লক্ষ্য করুন। আল্লাহ এখানেও খুশু বর্ণনা করতে ক্রিয়াপদ ব্যবহার করেননি। তিনি নাউন বা বিশেষ্য ব্যবহার করেছেন। নাউন দ্বারা কী বুঝানো হয়? স্থায়িত্ব। তারা তাদের ঈমানের ক্ষেত্রে এমন একটি পরিপক্কতায় পৌঁছে গেছে যে, প্রতিবারই যখনি তারা নামাজ আদায় করে, বিশেষ করে যখন তারা নামাজ আদায় করে তখন খুশু সেই নামাজের একটি স্থায়ী বৈশিষ্ট্য হয়। এখন, আমার আপনার জন্য হয়তো আমাদের নামাজের সমগ্র সময়টাতে ওযু একটি স্থায়ী বৈশিষ্ট্য, কিবলার দিকে মুখ করে থাকাটা একটি স্থায়ী বৈশিষ্ট্য। সম্ভবত খুশু একটি স্থায়ী বৈশিষ্ট্য নয়। আমার প্রতিটি নামাজে। এখন চলুন, খুশু কী তা জানার চেষ্টা করি। আরবি 'খাসাআ'—যেখান থেকে খুশু শব্দটি এসেছে—মানে, যখন আপনি এতটাই ভীত হয়ে পড়েন, যে ভয় আপনাকে এতোটাই অভিভূত করে ফেলে যে, আপনার পেশীগুলো অসাড় হয়ে পড়ে। একটি উদাহরণ থেকে বিষয়টা বুঝি। মনে করুন, কেউ একজন একদিকে তাকিয়ে রাস্তা পার হচ্ছে আর সে বুঝতে পারেনি যে, অন্যদিক থেকে দ্রুত গতিতে একটি ট্রাক তার দিক

সূরা আল-মু'মিনুনে বিশ্বাসীদের কিছু বৈশিষ্ট্য

Image
  সূরা আল-মু'মিনুনের শুরুতে বিশ্বাসীদের কিছু বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে। সূরাটির শেষের দিকে গেলে আমরা দেখবো, শেষ দিকেও মু'মিনদের আরো কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হয়েছে। আমরা প্রথম প্যাসেজটি নিয়ে বহু আলোচনা শুনেছি। কিন্তু অধিকাংশ সময় শেষ দিকে উল্লেখিত যোগ্যতাগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় না। যা আলোচনাটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ রূপ দান করে। সূরাটির শেষে গেলে আমরা সেগুলো নিয়েও আলোচন করবো। এখন চলুন, প্রথম দিকে উল্লেখিত মুমিনদের কোয়ালিটিগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক। আল্লাহ তায়ালা বলেন- قَدۡ اَفۡلَحَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ ۙ - মু’মিনরা সফল হয়ে গেছে। আয়াতের শুরুতে 'কাদ' শব্দটি খেয়াল করেছেন? কোনোকিছু ইতোমধ্যে ঘটে গেছে এমন বুঝাতে বা নিশ্চয়তা বুঝাতে 'কাদ' ব্যবহৃত হয়। আমরা ভাবি, সত্যিকারের বিশ্বাসীরা ভবিষ্যতে জান্নাত অর্জন করবে। কিন্তু, আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা এই আয়াতে বলছেন, তোমাদের যদি সত্যিকারের বিশ্বাস থেকে থাকে তাহলে তোমরা ইতোমধ্যেই সফলতা অর্জন করে ফেলেছ। সফলতা অর্থ বুঝাতে যে আরবি শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে তার দিকেও মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। ফাল্লাহ অর্থ কৃষক। কৃষক কোদাল দিয়ে বীজ বপনের জন্য যে

"পুরুষ নারীর মত নয়।"

Image
  পশ্চিমা সমাজ তোমাকে যাই শেখাক না কেন, কার্টুনগুলো তোমাকে যাই দেখাক না কেন, ডিজনী চ্যানেলে যাই প্রদর্শন করা হোক না কেন— আমাদের বুঝতে হবে মানবজাতি পুরুষ এবং নারীতে বিভক্ত। আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা বলেন— "ইয়া আইয়ুহান নাস! ইন্না খালাকনাকুম মিন জাকারিন ওয়া উনসা।" "ও মানুষ! আমি তোমাদের এক পুরুষ এবং এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি।" আমরা সবাই একজন পুরুষ এবং একজন নারী থেকে এসেছি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আরো বলেন- "ওয়া বাসসা মিনহুমা রিজালান কাসীরাও ওয়া নিসাআ।" ওই দুইজন থেকে আমি বহু পুরুষ এবং বহু নারী ছড়িয়ে দিয়েছি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আরো বলেন- "ওয়া লাইসাস জাকারু কাল উনসা" - "পুরুষ নারীর মত নয়।" এতো সহজ একটি আয়াত। শত শত বছর যাবৎ মানুষ এই আয়াতটার প্রতি ঐভাবে গুরুত্ব দেয়নি। এমন সহজ একটি কথা কেন কুরআনে উল্লেখ করা হলো! কিন্তু এখন, আধুনিক জাহেলিয়াতের এই যুগে আমাদেরকে এই আয়াতটির উদ্ধৃতি দিতে হচ্ছে। এখন, এই সহজ আয়াতটি বিশাল একটি অর্থ প্রদান করছে। "ওয়া লাইসাস জাকারু কাল উনসা- পুরুষ নারীর মত নয়।" এত সহজ একটি ফ্যাক্ট! এমন অকাট্য

দুনিয়ার নারীদের সরদার হজরত ফাতিমা (রা.)

Image
  একবার রাসুল (সা.) নামাজে সিজদা দিচ্ছেন। উকবা উটের পচাগলা নাড়িভুঁড়ি এনে তাঁর পিঠের ওপর ফেলে দিল। দূর থেকে কুরাইশ নেতারা এ দৃশ্য দেখে অট্টহাসিতে ফেটে পড়েছিল। রাসুল (সা.) কিন্তু সিজদা থেকে উঠলেন না। খবরটি হজরত ফাতিমা (রা.) বিনতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কানে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ছুটে যান তাঁর বাবার কাছে। দারুণ মমতায় নিজ হাতে তাঁর বাবার পিঠ থেকে ময়লা সরিয়ে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে দেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘পৃথিবীর নারীদের মধ্যে তোমাদের অনুসরণের জন্য মারিয়াম বিনতে ইমরান, খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ, ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ ও ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া যথেষ্ট।’ (তিরমিজি) ফাতিমা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ১৮টি হাদিস বর্ণনা করেছেন। রাসুল (সা.)-এর কাছে যখন ওহি নাজিল হতে শুরু হয়, ফাতিমা (রা.)-এর বয়স তখন পাঁচ বছর। তিনি পবিত্র ঘরে ইসলামি পরিবেশে বড় হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন খাদিজা (রা.)-এর মেয়ে। মদিনায় হিজরতের পর হিজরি দ্বিতীয় সনে আলী (রা.)-এর সঙ্গে ফাতিমার বিয়ে হয়। সে সময় আলী (রা.)-এর সম্পদের মধ্যে ছিল শুধু একটি বর্ম। সেটি বিক্রি করে তিনি ফাতিমা (রা.)-এর মোহরানা আদায় করেছিলেন। আরবের প্রথা অনুযায়ী ব