Posts

Showing posts from July, 2023

ঘুম থেকে জেগে উঠার পর দুআ

Image
  ঘুম থেকে জেগে উঠার পর আমরা কোন দুআ পড়ি? "আলহামদুলিল্লাহিল্লাযী আহইয়ানা বা'দামা আমাতানা ওয়া ইলাইহীন নুশুর। " অর্থ: সকল প্রশংসা তাঁর জন্য যিনি আমাদের মৃত্যুর (ঘুমের পর) পর আবার জীবন দিয়েছেন। আর তাঁর দিকেই আমাদের প্রত্যাবর্তন। প্রতিদিন একটি নতুন জীবন। প্রতিবার আল্লাহ আপনাকে জেগে উঠার সুযোগ দিচ্ছেন এই জন্য যে, যেন ভুল করে থাকলে আবার নতুন করে শুরু করতে পারেন। ভালো ভালো আমল করে যেন জান্নাতের উচ্চ মাকাম লাভ করতে পারেন। ক্রমান্বয়ে জান্নাতে নিজের অবস্থান যেন উন্নত করে নিতে পারেন। আল্লাহ বলেন- وَ لِکُلٍّ دَرَجٰتٌ مِّمَّا عَمِلُوۡا - "প্রত্যেককে তার আমল অনুযায়ী দারাজাত বা লেভেল দেয়া হবে।" (৬:১৩২) অর্থাৎ আপনি যত বেশি ভালো কাজ করবেন তত উপরের জান্নাত পাবেন। প্রতিদিন ঘুরে ফিরে নেক আমল করার সুযোগগুলো বার বার আমাদের কাছে আসে। বিশেষ করে প্রতিদিনের ফরজ সুন্নত নামাজগুলো। এগুলোকে বোঝা হিসেবে দেখবেন না । সুযোগ হিসেবে দেখুন। আল্লাহ নিজেই বলেছেন- اِنۡ اَحۡسَنۡتُمۡ اَحۡسَنۡتُمۡ لِاَنۡفُسِکُمۡ - তোমরা যদি ভাল কর, তবে নিজেদের জন্যই ভাল করবে।(১৭:৭) আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) বলেন

মানুষকে যখন সৃষ্টি করা হয়...

Image
  মানুষকে যখন সৃষ্টি করা হয় তখন তাকে সকল সৃষ্টির উপর সর্বাধিক মর্যাদাবান এবং সম্মানিত করে সৃষ্টি করা হয়। সে মর্যাদা আসে আল্লাহর দেওয়া রূহ আমাদের ভেতর ফুঁকে দেওয়ার কারণে। ঐ আধ্যাত্মিক আলো যার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সাথে যুক্ত হই। যে আলো নিজেই আল্লাহর সাথে যুক্ত হতে চায়। আর রূহ আল্লাহর এতই বিস্ময়কর এক সৃষ্টি যে, আল্লাহ ফেরেশতাদের সকল ব্যাটালিয়নকে, যাদের সংখ্যা গণনাতীত, সকল আকাশের সমস্ত ফেরেশতাদের তিনি বলেন- فَاِذَا سَوَّیۡتُهٗ وَ نَفَخۡتُ فِیۡهِ مِنۡ رُّوۡحِیۡ فَقَعُوۡا لَهٗ سٰجِدِیۡنَ - "আমি যখন তাকে পূর্ণ মাত্রায় বানিয়ে দেব আর তাতে আমার পক্ষ হতে রূহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার জন্য সিজদাবনত হও।" (১৫:২৯) অন্য কথায়, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আদম আলাইহিস সালাম এবং তাঁর সন্তানদের সৃষ্টি করেছেন এমন সর্বোচ্চ সম্মান এবং মর্যাদা দিয়ে যে সম্মান এবং মর্যাদা আল্লাহর কোনোসৃষ্টি কোনোকালে পায়নি। সর্বোচ্চ সম্মান!! এ ধারণাটি এতোই শক্তিশালী যে, তার মানে, ধরাপৃষ্ঠে জন্ম নেওয়া প্রতিটি আদম সন্তান, পৃথিবীর যে প্রান্তেই তার জন্ম হোক না কেন, যে গ্রামেই তার জন্ম হোক না কেন, যে শতকেই তার জন্ম হোক ন

ফিতনার এই যুগে বাচ্চাদের কীভাবে বড় করবো?

Image
  ভয়াবহ ফিতনার এই যুগে আমার বাচ্চাদের কীভাবে বড় করবো? (২য় পর্ব) - নোমান আলী খান শয়তান মানুষের নিকট বিভিন্ন উপায়ে আসে। আল্লাহ এমনকি বলেছেন মানুষের মাঝে শয়তান আছে, জীনদের মাঝে শয়তান আছে। রাইট? মিনাল জিন্নাতি ওয়ান নাস। সুতরাং, এমন অনেক মন্দ প্রভাব আছে যা এসে আমার অল্পবয়সী ছেলে বা মেয়েকে ধরাশায়ী করতে চাইবে। আর তারা এতে গুরুতরভাবে প্রভাবিত হয়ে পড়বে। আমাকে নিশ্চিত করতে হবে তারা যেন এ ধরণের পরিবেশে নিজেকে রক্ষা করতে পারে। কীভাবে নিশ্চিত করবেন যে, আমাদের শিশুরা যেন এ ধরণের পরিবেশ হ্যান্ডল করতে পারে। এ খুৎবা সব উত্তর দিতে পারবে না। আমি আগেই আপনাদের বলে রাখছি। কিন্তু এমন কিছু বিষয় আছে যেগুলো নিয়ে আমরা সতর্ক হতে পারি এবং কিছু প্র্যাক্টিক্যাল পদক্ষেপ নিতে পারি। আমি একটি অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করতে যাচ্ছি। যখন আমি একটি মুসলিম দেশে গিয়েছিলাম (তখন এ অভিজ্ঞতাটা হয়েছিল)। কারণ আমি ভেবেছিলাম তরুণদের সমস্যা তথা মুসলিম তরুণদের সমস্যা... এটা তো পাশ্চাত্যের বিষয়। মুসলমানরা, আলহামদুলিল্লাহ্‌, মুসলিম দেশে বাস করা মুসলমানরা, যারা আযান শুনতে পায়, খাবার হালাল না হারাম এটা নিয়ে চিন্তা করতে হয় না, যারা জীবনের

আল-কারীম

Image
  আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার একটি নাম হলো আল-কারীম। মূল শব্দ 'কারাম।' এখন 'কারাম' বলতে আসলে কী বুঝায়? বিখ্যাত ভাষাবিদ ইবনে মিসকাওয়ে বলেন- 'কারাম' হলো অন্তরে কোনো ধরণের খারাপ অনুভব করা ব্যতীত প্রচুর পরিমাণে ব্যয় করা। প্রতিটি উপকারী এবং কল্যাণকর উদ্যোগে ব্যয় করা। তাহলে তাঁর মতে, কারাম মানে শুধু দানশীলতা নয় বরং অতি মাত্রায় দানশীলতা। কোনো কৃপণতা অনুভব করা ছাড়া বা দান করে ফেলার পর অনুশোচনা অনুভব করা ছাড়া দান করা। " ধুর! কেন ঐখানে এতো টাকা দান করে ফেললাম!" এমন কিছু অনুভব করা ছাড়া দান করার নাম হলো 'কারাম।' বরং দান করার পরে আপনি ভালো অনুভব করেন। আর আপনি প্রতিটি উপকারী প্রজেক্টে দান করেন। ইমাম গাজ্জালীর মতে- 'কারাম' হলো দয়াদ্র মনে দানশীলতা প্রদর্শন করা। আপনার কাছে চাওয়ার পূর্বেই আপনি দান করেন। এমনকি প্লেটের খাবারও। আর কেউ যদি আপনার সবচেয়ে মূল্যবান জিনিসও আপনার কাছে চায়, আপনি তার সাথে ভদ্র আচরণ করেন। তাহলে 'কারাম' হলো ম্যাগন্যানিমাসলি দান করা। ম্যাগন্যানিমাসলি মানে- দান করার সময় আপনার অন্তর উদারতাটা অনুভব করে, একটি ভালো লাগা অনুভব

একটি টেক্সটবুক, একজন শিক্ষক, একটি পরীক্ষা এবং রেজাল্ট

Image
  একটি টেক্সটবুক, একজন শিক্ষক, একটি পরীক্ষা এবং রেজাল্ট ---------------- * ---------------- স্কুল, কলেজ, ভার্সিটিতে সবসময় আমরা বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষা দিয়ে আসছি। আমি আমার নিজেকে এবং আপনাদের সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে, উচ্চ শিক্ষা অর্জনের পথে আপনি যত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করবেন তার চেয়েও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা আছে। আর তা হলো জীবনের পরীক্ষা। আল্লাহ তায়ালা সূরা মুলকের দ্বিতীয় আয়াতে বলেন- الَّذِیۡ خَلَقَ الۡمَوۡتَ وَ الۡحَیٰوۃَ لِیَبۡلُوَکُمۡ اَیُّکُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا - "যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম।" এটা এমন এক পরীক্ষা যা আমাদের চিরস্থায়ী পরিণতি নির্ধারণ করে দিবে। এখন, প্রতিটি পরীক্ষার একটি টেক্সটবুক থাকে। জীবনের পরীক্ষার টেক্সটবুক হলো কুরআন। কুরআন আমাদের গাইড। আর এ গাইডটা কতই না সুন্দর! প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য কোনো মিথ্যা এ বইয়ের কাছেও আসতে পারে না। এই বইটি 'কিতাবুন মুবারাক' একটি বরকতময় বই। এই বইটি নিজেই একটি মিরাকল। এর তিলাওয়াতে আছে বারাকাহ, এর মুখস্ত করাতে আছে বারাকা

ফিতনার এই যুগে আমার বাচ্চাদের কীভাবে বড় করবো?

Image
  ভয়াবহ ফিতনার এই যুগে আমার বাচ্চাদের কীভাবে বড় করবো? - নোমান আলী খান আমেরিকার মুসলিম কমিউনিটির মত বা ইউরোপের অনেক দেশের মত, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া যেখানে মুসলমানরা সংখ্যালঘু… আমরা সেখানে ইসলামিক সেন্টার নির্মাণ করতে চাই, ইসলামী স্কুল, কিশোর প্রজেক্ট বা এ ধরণের প্রজেক্ট চালাতে চাই আমাদের সন্তানদের ইসলামী পরিবেশে বড় করার জন্য। আমি সবার আগে এ কথা বলে শুরু করতে চাই যে, আমাদের সবার উচিত আন্তরিক দোয়া করা এমন যে কোনো প্রচেষ্টার জন্য। যা কিছুটা অগ্রগতি অর্জনের চেষ্টা করছে, কিছুটা সেবা দেয়ার চেষ্টা করছে এবং আগুয়ান প্রজন্মের মধ্যে ইসলামী মূল্যবোধ প্রবেশ করানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু আজ আমি অন্য একটি দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলতে চাই। একই বিষয়, কিন্তু ভিন্ন একটি দৃষ্টিকোণ থেকে। বিজনেস ব্যাকগ্রাউন্ড এবং ম্যানেজমেন্ট ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসার কারণে আমি আপনাদের বলতে পারি, যখন কোনো প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব পান, আপনার Goals বা লক্ষ্যগুলো নিয়ে সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। লক্ষ্যগুলো সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা লাভ করার পর আপনি সিদ্ধান্ত নিবেন কি কি পদক্ষেপ করতে হবে সেসব লক্ষ্যগুলো অর্জনের

নামাজ পড়তে যদি অলসতা লাগে

Image
  কখনো নামাজ পড়তে যদি অলসতা লাগে তাহলে এ কয়েকটি আয়াতের কথা স্মরণ করুন। আখিরাত সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য আল্লাহ এমন ধরণের ক্রিয়াপদ ব্যবহার করেছেন যা শুনেই আপনার হার্ট বিট বেড়ে যায়, হিম্মত বেড়ে যায়, কাল্পনিক শক্তি বেড়ে যায়, ঈমান বেড়ে যায়। আপনি কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেন। ১. فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ - আল্লাহর স্মরণের দিকে শীঘ্র ধাবিত হও।" (৬২:৯) ২. وَ سَارِعُوۡۤا اِلٰی مَغۡفِرَۃٍ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَ جَنَّۃٍ عَرۡضُهَا السَّمٰوٰتُ وَ الۡاَرۡضُ ۙ اُعِدَّتۡ لِلۡمُتَّقِیۡنَ - তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমার দিকে ও সেই জান্নাতের দিকে যার বিস্তৃতি হচ্ছে আসমানসমূহ ও যমীনের সমান, যা মুত্তাকীদের জন্য তৈরী করা হয়েছে। (৩:১৩৩) ৩. سَابِقُوۡۤا اِلٰی مَغۡفِرَۃٍ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَ جَنَّۃٍ عَرۡضُهَا کَعَرۡضِ السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡضِ - তোমরা তোমাদের রবের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সেই জান্নাতের দিকে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হও, যার প্রশস্ততা আসমান ও যমীনের প্রশস্ততার মত। (৫৭:২১) ৪. فَاسۡتَبِقُوا الۡخَیۡرٰتِ ؕ - "সওয়াবের কাজে তোমরা প্রতিযোগিতা করো।" (২:১৪৮) যখন সৎ কাজের কথা আসে তখন

কঠিন সময়ে আল্লাহর দ্বীন আঁকড়ে ধরে থাকলে...

Image
  কঠিন সময়ে আল্লাহর দ্বীন আঁকড়ে ধরে থাকলে কি অতিরিক্ত কোনো পুরস্কার পাওয়া যাবে? ড. ইয়াসির: অবশ্যই যাবে। অবশ্যই সে অতিরিক্ত পুরস্কার পাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের বলেছেন, অর্থাৎ সাহাবাদের বলেছেন- "এমন এক সময় আসবে যখন একজনের ধর্ম বিশ্বাসে অটুট থাকাটা এমন কঠিন হবে যেন সে তার হাতে জ্বলন্ত কয়লা ধরে রেখেছে। যে এটা করতে পারবে সে তোমাদের পঞ্চাশ জনের সমান পুরস্কার পাবে।" এটা শুনে সাহাবারাও অবাক হয়ে গেলেন! তারা বললেন- "আপনি বুঝিয়েছেন তাদের পঞ্চাশ জনের সমান?" তিনি বললেন- "না। তোমাদের পঞ্চাশ জনের সমান।" আমি বলছি না যে, এ পুরস্কার আমাদের সময়ের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু এখান থেকে কী শিক্ষা পাচ্ছেন? কঠিন সময়ে আল্লাহর দ্বীন মেনে চললে অগণিত অগণিত পরিমাণে বেশি পুরস্কার পাওয়া যাবে। মুসনাদে ইমাম আহমদের একটি হাদিস। আমাদের রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- "বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য এবং ফিতনার সময়ে আল্লাহর ইবাদাত করা আমার দিকে হিজরত করার মত।" আর আপনি ঠিক এটাই করছেন। আপনি সব নোংরামি এবং ফিতনা প্রত্যাখ্যান করে আল্লাহর দিকে ফিরছেন।

সুরা আলায় আখিরাতকে স্মরণ

Image
  সুরা আলা পবিত্র কোরআনের ৮৭তম সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ। ১ রুকু, ১৯ আয়াত। সুরার শুরুতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আল্লাহ সবকিছু সৃষ্টি, সংগঠন ও নিয়ন্ত্রণ করে পথ দেখিয়েছেন। রাসুল (সা.) কখনো তাঁর আদেশ ভুলে যাবেন না। আল্লাহর অসীম জ্ঞানের কথা উল্লেখ করে মানুষকে সৎ উপদেশ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আল্লাহকে যে ভয় করে, সে মহানবীর (সা.) উপদেশ গ্রহণ করবে এবং পরকালে সফল হবে। সুরার ১ থেকে ৫ আয়াতে আল্লাহ সৃজনশীলতার কথা বলা হয়েছে। তিনি সংগঠন ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মানবজাতিকে পথ দেখিয়েছেন। সমগ্র মানবজাতির প্রতি তাঁর অনুগ্রহ ও অবদানের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর ৬-৯ আয়াতে আল্লাহ নবী মুহাম্মদ (সা.) এর উপর তাঁর অবদান ও উপদেশের কথা বলেছেন। ১০-১৫ নম্বর আয়াতে সব মানুষের প্রতি দেওয়া আল্লাহর উপদেশ মান্য ও অমান্য করার ফলাফল দুনিয়া ও আখিরাতে কী হবে, তা বর্ণনা করা হয়েছে। ১৬-১৭ আয়াতে আল্লাহ উপদেশ দিয়েছেন। দুনিয়াকে আখিরাতের চেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়ার কারণেই এই অমান্যতা। সবশেষে আল্লাহ বলেছেন, তাঁর এই উপদেশ মানুষের জন্য চিরন্তন। অন্যান্য জাতির প্রতিও একই উপদেশ। সুরা আলার শুরুতেই আল্লাহ

সুরা কমরে রসুল (সা.)–এর ইশারায় চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়া

Image
  সুরা কমর পবিত্র কোরআনের ৫৪তম সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ। এর ৩ রুকু, ৫৫ আয়াত। কমর অর্থ চাঁদ। রাসুল (সা.)–এর নবুওয়াতের সত্য প্রমাণের জন্য কুরাইশরা চন্দ্রকে দ্বিখণ্ডিত করতে বললে মহানবী (সা.) তাঁর আঙুলের ইশারা করলে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। এ সুরায় বলা হয়েছে, নুহ (আ.)-এর সম্প্রদায়, আদ জাতি, লুত (আ.)-এর সম্প্রদায় এবং ফেরাউন সত্যের আমন্ত্রণ পেয়েও তা অস্বীকার করেছিল। এর পরিণতিতে তারা চিরতরে হারিয়ে যায়। এ সুরার শুরুতেই অলৌকিক ঘটনাটি বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর দেখানো নিদর্শন, কাফেরদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া এবং তাদের পরিণতি সম্পর্কে। অবিশ্বাসীরা নিদর্শন দেখলেও যে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, এটাই তাদের চিরন্তন স্বভাব। আল্লাহ প্রাচীন উদাহরণ দিয়ে টেনে এনেছেন আদ, সামুদ ও ফেরাউনসহ নুহ (আ.) ও লুত (আ.)–এর জাতি তা অস্বীকার করার পরিণতির কথা। বিভিন্ন জাতিকে আল্লাহ বিভিন্ন উপায়ে শাস্তি দিয়েছেন। বেশির ভাগই প্রাকৃতিক শক্তি দিয়ে। তাদের পরিণতির বর্ণনা দেওয়ার পরপরই আল্লাহ বারবার বেছেন, ‘আমি এ কোরআনকে উপদেশ লাভের সহজ উৎস বানিয়ে দিয়েছি। এমতাবস্থায় উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?’এরপর আল্লাহ আগের জাতিগু

বিবাহিতরা যখন ব্যভিচারে লিপ্ত হয়

Image
  বিবাহিতরা যখন ব্যভিচারে লিপ্ত হয় --------------------------- যখন একজন বিবাহিত পুরুষ বা বিবাহিত নারী জেনা ব্যভিচার করে এটা ছোটো কোনো অপরাধ নয়। এটা এমনকি 'হুদুদের' অন্তর্ভুক্তও নয়। হুদুদ হলো আপনি যখন কোনো অপরাধ করেন এ জন্য আপনাকে একটি শাস্তি দেওয়া হয়। যেন আপনি ঠিক হয়ে যান। এ ভুল আর না করেন। এ কারণে অবিবাহিতরা ব্যভিচারে লিপ্ত হলে এবং যদি চারজন সাক্ষী পাওয়া যায়, তাহলে শরীয়তের বিধান অনুযায়ী একশো বেত্রাঘাত করতে হবে। (ইসলামী রাষ্ট্রে শরিয়তি আদালত এগুলো কার্যকর করবে। সকল যুক্তি প্রমান সাক্ষ্য উপস্থাপনের পর।) [বিধানগুলো আপনাদের জানাচ্ছি যেন বুঝতে পারেন এগুলো হালকাভাবে নেয়ার বিষয় না। এগুলো খুবই গুরুতর গুরুতর অপরাধ।] কিন্তু, বিবাহিতদের জেনা ব্যভিচার আরো বড় অপরাধ। এটা আসলে আল-মুহারবা (اَلْمُهَارَبَةْ)। আল-মুহারাবার অর্থ বুঝিয়ে বলছি। মুহারাবা অর্থ আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা। আপনি যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে। আর যখন কেউ আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, তাদেরকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করতে হবে। যদি কেউ ব্যভিচারের মাধ্যমে তার বিবাহক

সুরা আল ইমরান: তিন অলৌকিক ঘটনা

Image
  সুরা আল-ই-ইমরান পবিত্র কোরআনের তৃতীয় সুরা। অবতীর্ণ হয়েছে মদিনায়। এর রুকু ২০, আয়াত ২০০। নাজরানের খ্রিষ্টানরা মদিনায় মহানবী (সা.)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে নিজেদের সত্য ধর্মাবলম্বী বলে দাবি করলে সব ভুল ধারণা নিরসন করতে আল্লাহ এই সুরা অবতীর্ণ করেন। মহানবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে এই সুরা পড়বে, সপ্ত জমিন থেকে সপ্ত আসমান পর্যন্ত তার সওয়াব হবে । সুরা আলে ইমরানে ইমরান পরিবারের কথা বলা হয়েছে। পরিবারটি আল্লাহর ওপর অবিচলতা, পরিশুদ্ধতা এবং ধর্মের সেবার এক উজ্জ্বল নিদর্শন। এ সুরার কেন্দ্রীয় বিষয় আল্লাহর ধর্মের ওপর অবিচলতা। সুরাটি দুই ভাগে বিভক্ত : প্রথম ভাগের (আয়াত: ১-১২০) বিষয় চিন্তা ও দর্শনের মোকাবিলায় কীভাবে অবিচল থাকতে হয়। নাজরানের খ্রিষ্টীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) আলোচনা বিতর্কের মধ্যেই তা ফুটে উঠেছে। দ্বিতীয় ভাগের (আয়াত: ১২১-২০০) আয়াতগুলো আমাদের সামনে স্পষ্ট করে, ধর্মের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কীভাবে অবিচল থাকতে হয়। ওহোদের যুদ্ধ এবং এর প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত ঘটনাপ্রবাহের পটভূমিতে এই আলোচনা করা হয়েছে। সুরা আল ইমরানের বিষয়বস্তু সুরাটির ১ থেকে ৬ আয়াতে রয়েছে

সুরা মুহাম্মদে কাফেরদের ধ্বংসের কথা

Image
  সুরা মুহাম্মদ পবিত্র কোরআনের ৪৭তম সুরা। এই সুরা মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছিল। এর ৪ রুকু, ৩৮ আয়াত। ৩৮ আয়াতবিশিষ্ট সুরা মুহাম্মদে মুমিন ও কাফেরদের মধ্যে চিরসংঘাত এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশ্বাসীদের সাহায্য, মুত্তাকিদের পুরস্কার, জিহাদ, আল্লাহর রাস্তায় সম্পদ ব্যয়ের কথা বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি কৃপণতা করতে নিষেধ করা হয়েছে। ধনসম্পদ আল্লাহর দান। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সম্পদশালী করেন বা গরিব রাখেন। আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা এবং অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো সম্পদশালীর দায়িত্ব। আল্লাহর রাস্তায় বা মানুষের উপকারে ব্যয় না করে কার্পণ্য করা হারাম। কেউ তা করলে তাঁকে জাহান্নামের ভয় দেখানো হয়েছে কৃপণতার কারণে প্রাচীন বহু জাতি ধ্বংস হয়েছিল। নবীজি (সা.) উম্মতদের এ অভ্যাস ছাড়ার তাগিদ দিয়েছেন। তিনি কৃপণতা থেকে আল্লাহর কাছে মুক্তি চাইতেন। কারণ কৃপণতা আল্লাহ পছন্দ করেন না। মুমিনকে যেমন মিতব্যয়ী হতে হয়। অমিতব্যয়িতা ও কৃপণতা দুটেই মন্দ। আল্লাহ বলেছেন, ‘দেখো, তোমরাই তারা যাদের আল্লাহর পথে ব্যয় করতে বলা হচ্ছে, অথচ তোমাদের অনেকে কৃপণতা করছ; যারা কার্পণ্য করে তারা কার্পণ্য করে নিজেদেরই প্রতি। আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্ত, যদি

টাকার চেয়েও মূল্যবান

Image
  টাকার চেয়েও মূল্যবান ------------------------------- একজন মুমিন কখনো ইচ্ছাকৃতভাবে সক্রিয়তার সাথে সময় নষ্ট করে না। ভাবতে পারেন? কেউ টাকার কতগুলো বান্ডিল নিয়ে একটার পর একটা আগুনে জ্বালাতে থাকলো! কাউকে এমন করতে দেখলে মনে মনে বলবেন, হায়রে! মানুষ কি কোনোদিন এমন বোকা হতে পারে! আল্লাহর শপথ! যখন আমরা সময় নষ্ট করি, আমরা আমাদের মূল্যবান সময়গুলোকে জ্বালিয়ে দিচ্ছি। এর চেয়েও খারাপ। টাকা হয়তো আবার উপার্জন করা যাবে। কিন্তু, সময় আমরা আর ফিরে পাবো না। পরেরবার যখন সময় নষ্ট করবেন, তখন কল্পনায় একটি চিত্র অঙ্কন করুন- এটিএম থেকে টাকা তুলে সেগুলো ডাস্টবিনে ফেলে দিচ্ছেন। নিজেকে তখন জিজ্ঞেস করুন- আমি কি কোনোদিন এমন কাজ করব? আমি কি আমার এটিএম থেকে টাকা তুলে ডাস্টবিনে ফেলে দিবো? আমি কখনো এমন কাজ করবো না। তাহলে কেন আমি টাকার চেয়েও মূল্যবান, উত্তম একটি জিনিস এভাবে অপচয় করে ফেলছি! উপলব্ধি করুন। কুরআনের বহু আয়াত আমাদের এ ব্যাপারে সতর্ক করেছে। দুনিয়াতে সময় নষ্ট করার কারণে রোজ হাশরের দিন তাদের আফসুসের আর অন্ত থাকবে না। আল্লাহ স্বয়ং আমাদের কুরআনে বলেছেন- اَوَ لَمۡ نُعَمِّرۡکُمۡ مَّا یَتَذَکَّرُ فِیۡهِ مَنۡ

জীবন কেন সমস্যায় পরিপূর্ণ?

Image
  মানুষ এসে বলে- উস্তাদ, আমি নামাজ পড়ি, রোজা রাখি, আমি হারাম থেকে বেঁচে থাকি, আমি হালাল খাবার খাই, আমি হালাল আয় করি তবু আমার জীবন কেন সমস্যায় পরিপূর্ণ? আমি এমনকি তাহাজ্জুদও পড়ি। আমি সোম এবং বৃহস্পতিবারে রোজা রাখি। আমি যে কত দোআ করি। তবু আমার সমস্যার যেন অন্ত নেই। তাহলে এতসব ইবাদাত করার অর্থ কী। আমি সঠিক কাজ করি সবসময় তবু জীবনের সবকিছু উল্টো পথে চলছে। এমনকি মনে হয়, আমি যত বেশি ইসলামিক কাজ করি জীবনটা ততই সমস্যাপূর্ণ হয়ে পড়ে। এ ধরণের চিন্তা ভাবনা খুবই কমন, আসলে। একজন এমনকি এটাও বলেছে- জানেন? আমি যত কম ইসলাম ফলো করি জীবন তত সহজ হয়ে যায়। আমি মুখ ফুটে বলতে চাই না। আমি জানি আল্লাহ শুনছেন। সে এভাবে মাথা এদিক ওদিক করে লুকিয়ে লুকিয়ে বলার চেষ্টা করেছে। আমি তখন...এভাবে করলে কি এটা গোপন থাকবে? আমরা কি ঐ কর্নারে গিয়ে কথা বলবো? ফেরেশতারা তখন...ও তারা কর্নারে লুকিয়ে গেছে। এখন লিখতে আর পারবো না। হা হা হা। "আমি যখন নামাজ পড়া শুরু করি, সবকিছু কেমন কঠিন হয়ে পড়ে। আর যদি নাময পড়া ছেড়ে দেই, সবকিছু সহজ হয়ে পড়ে।" শরীর মুচড়িয়ে দু পাশে হাত ছাড়িয়ে বলে--"আমি শুধু বলছি। যা ঘটে তাই বলছি। " আম